দার্জিলিং: মোর্চার জঙ্গি আন্দোলনের পর বিমল গুরুংয়ের বিরুদ্ধে একের পর এক কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে প্রশাসন। রুজু হয়েছে মামলা। প্রত্যাহার করা হয়েছে নিরাপত্তারক্ষী। পাল্টা কর্মসূচি ঠিক করতে শনিবার বৈঠকে বসছে মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটি।
পাহাড়ে মোর্চার হিংসাত্মক আন্দোলনে বিমল গুরুংয়ের ডেরা দার্জিলিংয়ে বসেই তাঁকে চাঁচাছোলা আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী । বললেন, কোনও কাজ করবে না। ৫ বছর পর ভোট এলেই গায়ের জোর। ইস্যু নেই। বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন।
বৃহস্পতিবারের ঘটনায় ইতিমধ্যেই বিমল গুরুংয়ের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে প্রশাসন। বৃহস্পতিবারের অশান্তির ঘটনায় ষড়যন্ত্র, উস্কানি, হিংসা ছড়ানোর যে মামলা রুজু হয়েছে, তাতে নাম রয়েছে বিমল গুরুংয়ের। রাতে গুরুংয়ের সরকারি নিরাপত্তারক্ষীও প্রত্যাহার করে নিয়েছে রাজ্য সরকার।
রাতেই পুলিশ বিমল গুরুংয়ের খোঁজে তাঁর বাড়িতে গিয়েছিল! কিন্তু, পায়নি! বলেন, কালকে যা ঘটনা ঘটেছে, তা নিন্দার ভাষা নেই। কাল ঘণ্টা দেড়েক যাচ্ছেতাই করেছে। বোমা-বন্দুক জমায়েত করেছে। পাথর ছুড়েছে। কালিম্পং, কার্শিয়াংয়ে ভোট যোগ করলে আমাদের বেশি। মিরিকে হেরেছে। ভয় পেয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার মোর্চা সমর্থকরা যখন পাহাড়ে আগুন জ্বালাচ্ছে, তখনও রাজভবনের অদূরে ভানুভবনেই বসেছিলেন বিমল গুরুং। পরে সেখান থেকে বেরিয়ে পাতলেবাসে নিজের বাড়ি চলে যান তিনি। শুক্রবার সকালে ভানুভবনে জিটিএ-র অফিসও নিজেদের দখলে নিয়ে নেয় পুলিশ। পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, এগুলি যে ধাপে ধাপে গুরুংকে কোণঠাসা প্রক্রিয়া, তা আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না। গুরুংও এদিন আর ভানুভবনের দিকে আসেননি। দুপুরের দিকে তিনি পাতলেবাস থেকে সিংমারির পার্টি অফিসে যান।
অন্যদিকে, পাল্টা সুর চড়াচ্ছেন মোর্চা সভাপতিও। সিংমারিতে বসেই সেনা নামানো নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেন গুরুং। বলেন, পাওয়ার ট্রান্সফার করেনি। তার মধ্যে এই অসহযোগিতা। যখন সেনা নামানো হল, তাহলে রাজ্যেও করা হোক রাষ্ট্রপতি শাসন।
সূত্রের দাবি, শনিবার কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকেও বসছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। তারা আর জিটিএ-তে থাকবেন কিনা, পরবর্তী আন্দোলনের রূপরেখা কী হবে, তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে। যদিও, মুখ্যমন্ত্রী এসবে কোনও গুরুত্বই দিতে নারাজ। বলেন, ওনার কথার উত্তর আমি কেন দেব? আমার ব্লক সভাপতি দেবে।
গুরুংয়ের দাবি আলাদা গোর্খাল্যান্ড। মুখ্যমন্ত্রী চান পাহাড়ে শান্তি। এই দুইয়ের টানাপোড়েনে পাহাড়ে এখন চড়ছে রাজনীতির উত্তাপ। কবে তা ঠান্ডা হয়, সেটাই এখন দেখার।