নয়াদিল্লি ও কলকাতা: কয়লাকাণ্ডে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফের সমন পাঠাল (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট) ইডি। সূত্রের খবর, ২১ সেপ্টেম্বর দিল্লির সদর দফতরে তলব করা হয়েছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে। এই নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তৃতীয়বার তলব করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
ইডি সূত্রে খবর, প্রথমবার জিজ্ঞাসাবাদের পরেও আরও কিছু জানার প্রয়োজন থাকায় দ্বিতীয়বার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডাকা হয়। ইডি-র দাবি, মেল পাঠিয়ে তিনি জানান একদিনের নোটিসে তাঁর পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয়। সেই কারণেই তাঁকে তৃতীয়বার তলব করা হয়েছে। খবর ইডি সূত্রে।
অভিষেককে ইডি-র সমন ঘিরে ইতিমধ্যেই তৃণমূল ও বিজেপির চাপানউতোর দেখা গিয়েছে। গত সোমবার কয়লাকাণ্ডে ৯ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর অভিষেক হুঙ্কার দিয়েছিলেন, যা করার করে নিন। তৃণমূল ঝুঁকবে না। এর পাল্টা উত্তর দিয়েছি গেরুয়া শিবিরও।
কয়লাকাণ্ডের তদন্তে গত সোমবার দিল্লির দফতরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ন’ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল ইডি। তারপর ইডি-র দফতর থেকে বেরিয়েই, ফের বিজেপির বিরুদ্ধে সপ্তমে সুর চড়িয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, ইডি-র ওপরও চাপ রয়েছে। বিজেপি যাদের দিয়ে এসব করাচ্ছে, তারাও খুশি নয়... আমি বলছি, আমার বিরুদ্ধে প্রমাণ থাকলে সামনে আনুন... প্রতিটা রাজ্যে যাব। বিজেপি যা করার করুক।
২৮ অগাস্ট কয়লাকাণ্ডের তদন্তে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নোটিস পাঠায় ইডি। তাঁকে ৬ সেপ্টেম্বর, সোমবার সকাল ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে, দিল্লিতে ইডি দফতরে হাজির হতে বলা হয়েছিল। সেদিন সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ, দিল্লির আকবর রোডে জামনগর হাউসে ইডি-র দফতরে পৌঁছে যান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
জিজ্ঞাসাবাদের পর তিনি বলেছিলেন, আমাকে ডাকা হয়েছিল। শুরু থেকে বলেছি, যে কোনও তদন্তের মুখোমুখি হতে তৈরি। আমার বিরুদ্ধে ১০ পয়সার প্রমাণ পেলে ফাঁসিতে ঝুলতে রাজি। সকাল এগারোটায় এসেছি। এখন আটটা বাজে। ন’ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এটা ওদের কাজ। সম্মান করি। সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি। লিখিত বয়ান দিয়েছি।
অন্যদিকে, বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করুন। চেলা চামুন্ডারা ধরা পড়েছে। বিনয় মিশ্র কোথায় গেল, কত টাকার লেনদেন হয়েছে, সেই তথ্য দিন।
কয়লাকাণ্ডে সিবিআই-এর পাশাপাশি আর্থিক তছরুপের দিকটা খতিয়ে দেখতে তদন্তে নেমেছে ইডি। কয়লাকাণ্ডে নাম জড়িয়েছে যুব তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বিনয় মিশ্র ও অনুপ মাঝি ওরফে লালার।
ইডি সূত্রে দাবি, কয়লাকাণ্ডে মাফিয়াদের থেকে টাকা একাধিক হাত ঘুরে বিনয় মিশ্রের কাছে পৌঁছত। ওই দিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রশ্নমালা তৈরি করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সূত্রের দাবি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে জানতে চাওয়া হয়, বিনয় মিশ্রের সঙ্গে তাঁর কী কোনও সম্পর্ক ছিল? কয়লাকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত অনুপ মাঝি ওরফে লালা-কে তিনি চেনেন কিনা।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে দাবি,কয়লাকাণ্ডে দেশের বিভিন্ন জায়গায় টাকা পাচার হয়েছে। এমনকী বিদেশেও পাচার হয়েছে টাকা। সেই বিষয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হয় বলে সূত্রের দাবি।