শিলিগুড়ি: গতকাল রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের ৫ জেলা। পাহাড়ে বৃষ্টির জেরে ধসে দু’জনের মৃত্যু। অন্যদিকে, শিলিগুড়িতে টানা বৃষ্টি বিপর্যস্ত জনজীবন। এনজেপি স্টেশনে জল জমায় বাতিল হয়েছে একাধিক ট্রেন।
বিপর্যস্ত গোটা উত্তরবঙ্গ। কোথাও প্লাবিত এলাকা। কোথাও ধস, কোথাও আবার প্লাবনের আশঙ্কা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় তুঙ্গে প্রশাসনিক তৎপরতা। একটানা বৃষ্টির জেরে দার্জিলিং ও কার্শিয়ঙের একাধিক জায়গায় ধস নেমেছে। দার্জিলিংয়ের আলুয়াবাড়ি ও তিন মাইলে মৃত্যু হয়েছে কয়েক জনের।
অবিরাম বৃষ্টির জেরে এখন বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে মহানন্দা! জারি হয়েছে লাল সতর্কতা। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহওয়া দফতর। এর ফলে চরম আতঙ্কে শিলিগুড়ির বাসিন্দারা। ভুগছেন প্লাবনের আশঙ্কায়।
একটানা বৃষ্টিতে সেবক রোডে বিভিন্ন জায়গায় গাছ পড়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে শিলিগুড়ি শহর। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রাস্তায় নামেন মেয়র। যে কোনও রকম পরিস্থিতির মোকাবিলায় কর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে পুরসভা। মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ড্রেন পরিস্কার থাকার কারণে রাস্তায় জল জমেনি।


অন্যদিকে, অবিরাম বৃষ্টিতে জলের তলায় চলে গিয়েছে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের লাইন। শনিবার বাতিল করা হয়েছে--




  • নিউ জলপাইগুড়ি-বঙ্গাইগাওঁ প্যাসেঞ্জার

  • বামনহাট প্যাসেঞ্জার

  • দিনহাটা প্যাসেঞ্জার


উত্তরের এই দুর্যোগ নিয়ে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্ন সূত্রে খবর, দিল্লি থেকে মুখ্যসচিবকে ফোন করে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির ওপর নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বিশেষভাবে নজর দিতে বলা হয়েছে জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারের ওপর। ত্রাণ সামগ্রীর তৈরি রাখার পাশাপাশি, প্রয়োজনে দুর্গতদের নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেওয়ার বিষয়েও ব্যবস্থার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা।
উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সল্টলেকের কন্ট্রোল রুম থেকে উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ক’দিন আগে প্লাবিত হয়েছিল দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলা। যার প্রেক্ষিতে ৯ অগাস্ট বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, ডিভিসি অতিরিক্ত জল ছাড়ছে। ফলে এটি এক ধরনের ম্যান মেড বন্যা। ডিভিসি-র জল ছাড়ার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় বিদ্যুত্‍মন্ত্রীকে জানিয়েছি। ডিভিসি দীর্ঘদিন ধরে জলাধারের ড্রেজিং না করায় সমস্যা বেড়েছে।
এবার জলে ভাসছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা। এদিন আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারের জেলাশাসকের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করেন মুখ্যসচিব। নবান্ন সূত্রে খবর, ৬০ হাজার মানুষ দুর্গত। ইতিমধ্যেই ৭০০ ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। দুর্যোগের মোকাবিলায় বাতিল হয়েছে সেচ দফতরের কর্মীদের ছুটি।