শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: দলবদলের জেরে কোচবিহার জেলায় তাদের দখলে থাকা একমাত্র গ্রামপঞ্চায়েত হাতছাড়া হল বামেদের। বামফ্রন্ট ও বিজেপির পাঁচ সদস্যের যোগদানে মেখলিগঞ্জের নিজতরফ গ্রামপঞ্চায়েতে সংখ্যাগরিষ্ঠ হল তৃণমূল। দলত্যাগীদের দাবি, উন্নয়নের স্বার্থে তৃণমূলে যোগদান। বিরোধীদের অভিযোগ, পুরোটাই শাসকের ভয় আর প্রলোভনের রাজনীতি।
কোচবিহার জেলার মোট ১২৮টি গ্রামপঞ্চায়েতের মধ্যে কেবলমাত্র একটিই বামেদের দখলে ছিল। দলবদলের জেরে শিবরাত্রির সেই সলতেটুকুও এবার নিষ্প্রভ হওয়ার পথে। বামফ্রন্ট ও বিজেপির ৫ সদস্য তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় মেখলিগঞ্জ ব্লকের নিজতরফ গ্রামপঞ্চায়েতে এখন সংখ্যাগরিষ্ঠ শাসক শিবির।
মেখলিগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক তথা শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশচন্দ্র অধিকারী বলেছেন, ওই পঞ্চায়েতে আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হলাম। কিছুদিনের মধ্যেই বোর্ড গঠন করব।
২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে সিপিএম ও ফরওয়ার্ড ব্লক ৫টি আসন জিতে নিজতরফ গ্রামপঞ্চায়েতে বোর্ড দখল করে। মঙ্গলবার ফরওয়ার্ড ব্লকের একজন, সিপিএমের একজন এবং বিজেপির ৩ সদস্য তৃণমূলে যোগ দিতেই বদলে গিয়েছে সমীকরণ।
বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদানকারী নেতা বিজয় অধিকারী বলেছেন, কোনও চাপে নয়। উন্নয়নের স্বার্থেই এই যোগদান। এলাকার উন্নয়নের লক্ষ্য়ে তৃণমূলে যোগদানের এই সিদ্ধান্ত।
বাম ও বিজেপি দুপক্ষই এই ঘটনার সমালোচনা করেছে। তাঁদের অভিযোগ, ভয় ও প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন গ্রামপঞ্চায়েত দখল করছে তৃণমূল। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ধ্বংস করতে চাইছে।
মেখগিলগঞ্জ ব্লকে মোট ৮টি গ্রামপঞ্চায়েত।তার মধ্যে ৪টি গ্রামপঞ্চায়েত বিধানসভা ভোটের আগে পর্যন্ত বিরোধীদের দখলে ছিল। ভোটের ফল বেরোতেই দলবদলের মাধ্যমে ৩টি গ্রামপঞ্চায়েতের দখল নেয় তৃণমূল। বাকি ছিল নিজতরফ গ্রামপঞ্চায়েত। সেটার হাতবদলও এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।
উল্লেখ্য, ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে রাজ্যের বিভিন্ন জেলাতেই বিজেপিতে যোগদানের ঢল নেমেছিল। ভোটের আগে তৃণমূলের বেশ কয়েকজন প্রথমসারির নেতা সহ অনেক কর্মী বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। ভোটের আগে বিজেপি ২০০-র বেশি আসন নিয়ে রাজ্যে ক্ষমতায় আসার দাবি করেছিল। কিন্তু তাদের সেই দাবি সফল হয়নি। বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে রাজ্যে ক্ষমতায় তৃতীয়বারের জন্য প্রত্যাবর্তন ঘটেছে তৃণমূলের। এরপর রাজ্যজুড়েই তৃণমূলে যোগদানের ঢল নেমেছে।