শুভেন্দু ভট্টাচার্য, মাথাভাঙা: সাদা কাগজে টিপছাপ নিয়ে আদিবাসী পরিবারের জমি আত্মসাতের অভিযোগ উঠল কোচবিহারের এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। মাথাভাঙা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে আদিবাসী পরিবার। জমি আত্মসাতের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতা।


গরিব আদিবাসীর নিরক্ষরতার সুযোগ নিয়ে তাঁর জমি হাতানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। সাদা কাগজে আঙুলের টিপছাপ নিয়ে জমি আত্মসাতে অভিযুক্ত ওই নেতা। মৃত পূর্বপুরুষের নামে জমি রেজিস্ট্রি করা হয়। এরকম একাধিক অভিযোগ কোচবিহারের তৃণমূল নেতা ও জেলা পরিষদের প্রাক্তন সদস্য নজরুল হকের বিরুদ্ধে।


মাথাভাঙা থানা ও জেলাশাসকের কার্যালয়ে অভিযোগ দায়ের করেছে আদিবাসী পরিবার। পরিবারের দাবি, মাথাভাঙার ইন্দ্রের কুঠি এলাকায় ২ একর ৫ শতক জমি ছিল তাঁদের। ২০১৫ সালে পাওয়ার গ্রিড প্রকল্পে সেই জমি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। 


আদিবাসী পরিবারের অভিযোগ, তৃণমূল নেতা ও জেলা পরিষদের তৎকালীন সদস্য নজরুল হক তাঁদের বলেন, জমি বিক্রির সব ব্যবস্থা তিনিই করে দেবেন। অভিযোগ, এই আশ্বাস দিয়ে সাদা কাগজে আদিবাসী পরিবারের সদস্যের টিপছাপ নিয়ে নেন নজরুল। 


পাওয়ার গ্রিড থেকে কোনও ডাক না আসায় সন্দেহ হয় পরিবারের। অভিযোগ, খোঁজ নিতে গিয়ে তাঁরা জানতে পারেন, ২০১৬ সালের মার্চ মাসে তৃণমূল নেতা নজরুল হকের আত্মীয় করিমুল হকের নামে তাঁদের পুরো জমি রেজিস্ট্রি হয়ে গিয়েছে।


অভিযোগ, জমি আত্মসাৎ করে পাওয়ার গ্রিড প্রকল্পে তার পুরোটাই বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগকারী সোমা অসুর বলেন, ঠাকুর্দার আমার ২ একর ৫ শতক জমি। কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করি। তৃণমূল নেতা আমাকে ডাকে। বলে কোম্পানি আগে আমার কাছে আসবে। এলে তোকে বলব। এই বলে সাদা কাগজে টিপ সই নিয়ে নেয় আমার। ঠাকুর্দা ৫০ বছর আগে মারা গিয়েছে। তার নামে রেজিস্ট্রি হয়ে গিয়েছে জমির।


এপ্রসঙ্গে, কোচবিহার জেলা পরিষদের প্রাক্তন সদস্য তথা তৃণমূল নেতা নজরুল হক বলেন, আমি কারও জমি ভোগ দখল করছি না। ওখানে তো পাওয়ার গ্রিডের প্রকল্প রয়েছে। পাওয়ার গ্রিডের হাতেই রয়েছে ওই জমি। কোনও ভুলের জন্য হয়তো  আমার আত্মীয়ের নামে রেজিস্ট্রি হয়ে গিয়েছে। আমি যতদূর জানি শুনানি হয়েছে। ও টাকাও পেয়েছে। কারও জমি দখল করিনি। মিথ্যে অভিযোগ। পাওয়ারগ্রিডের কাছে ওর কোনো দাবি থাকলে আমরা সাহায্য করব।


পুলিশ-প্রশাসন অভিযোগের প্রেক্ষিতে কী ব্যবস্থা নেয়, এখন সেটাই দেখার।