কলকাতা: করোনার গ্রাস থেকে মুক্ত হতে শনিবার নতুন ভোরের সাক্ষী থাকল দেশ। দেশজুড়ে শুরু হল টিকাকরণ। স্যালুট জানানো হল করোনা যোদ্ধাদের। প্রথম দফার ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রক্রিয়ার সূচনা হল দেশব্যাপী। কিন্তু অতিমারির নাগপাশ থেকে বেরতে যখন নতুন লড়াইয়ের অঙ্গীকার দেশজুড়ে, তখন ভ্যাকসিন নিয়ে শুরু হল চাপানউতোর। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টিকাকরণ নিয়ে নবান্নে ভার্চুয়াল বৈঠকে মমতা অভিযোগ করেন, রাজ্যে প্রয়োজনের তুলনায় কম ভ্যাকসিন পাঠিয়েছে কেন্দ্র। অসহযোগিতা করছে। সেইসঙ্গে রাজ্যবাসীকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে, প্রয়োজনে ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী সংস্থার কাছ থেকে কেনা হবে বলে ঘোষণা করেন তিনি। যদিও পাল্টা মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেই এ নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগে সরব হয়েছে বিজেপি ও কংগ্রেস।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রকে ৩ লক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীর নাম পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্র পাঠিয়েছে ৩ লক্ষ ভ্যাকসিন।  কার্যত অর্ধেক ভ্যাকসিন এসেছে। কারণ, প্রত্যেককে ২টি ডোজ দিতে হবে। এদিন প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে রাজ্য সরকার জানায়, রাজ্যবাসীর প্রত্যেকের বিনামূল্যে ভ্যাকসিন পাওয়া উচিত। প্রয়োজন হলে আর্থিক দায়ভার নিয়ে ভ্যাকসিন কেনা হবে।


ভ্যাকসিন বণ্টন নিয়ে অসহযোগিতার অভিযোগ উড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে পাল্টা আক্রমণ করেছে বিজেপি। এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে রাজনীতির অভিযোগ করেছে কংগ্রেস।  রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, কম আসেনি টিকা।  একটা নামের তালিকা তৈরি হয়েছে। সেই অনুযায়ী এসেছে। উনি দেবেন।  গঙ্গাজল দেবেন না তার কী গ্যারান্টি আছে! প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, রাজ্যে ভ্যাকসিন পাওয়া উচিত, মমতা শুরু করে দিলেন ভ্যাকসিন পলিটিক্স! আসল মানুষ ভ্যাকসিন পাবে না।
সারা দেশে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সামনের সারিতে থাকা ৩ কোটি স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রথম পর্যায়ে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। গোটা বিশ্বে সবচেয়ে বড় ভ্যাকসিন প্রদান কর্মসূচি হাতে নিয়েছে ভারত। কেন্দ্র প্রথম দফার ভ্যাকসিন ডোজের খরচ বহনে সম্মত হয়েছে। আজ দিল্লির এইমস-এ দেশে এই প্রক্রিয়ার সূচনা করেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন। সেখানে প্রথম ডোজটি নেন শৌচাগারকর্মী মণীশ কুমার।  কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ভারতে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কোভিশিল্ড ও ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন-এই দুটি ভ্যাকসিনই জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োগ করায় ছাড়পত্র দিয়েছে দেশের নিয়ামক সংস্থা।