সন্দীপ সরকার, মধ্যমগ্রাম : করোনা দ্বিতীয় ঢেউ ক্রমশ ভয়াবহ আকার নিচ্ছে গোটা রাজ্যে। রোজ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে কোভিডে সংক্রমিত, মৃতের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে করোনা সংক্রমণ রুখতে অভিনব উদ্যোগ নিল মধ্যমগ্রামের এক আবাসন। আক্রান্ত আবাসিকদের নিভৃতবাস ও চিকিৎসার জন্য নিজেদের কমিউনিটি সেন্টারে গড়ে তোলা হয়েছে মিনি হাসপাতাল। বেড থেকে অক্সিজেন সবই মজুত সেখানে। আবাসনের বাসিন্দা ডাক্তার, নার্সরাই করবেন দেখভাল।


করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে কোয়ারেন্টিন বা নিভৃতাবাসে থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু ছোট্ট ফ্ল্যাটে সব সময় সেই পরিসর মেলে না। এই সমস্যা উপলব্ধি করে অভিনব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামে শিশিরকুঞ্জ আবাসনে। করোনা আক্রান্ত আবাসিকদের নিভৃতবাস ও চিকিৎসার জন্য কমিউনিটি সেন্টারেই গড়ে তোলা হয়েছে মিনি হাসপাতাল। 


মিনি কোভিড হাসপাতাল হয়ে ওঠা কমিউনিটি সেন্টারে রয়েছে ৬টি বেড। ৩টি অক্সিজেন সিলিন্ডার। বেডের পাশে টেবিল। অসুবিধা হলে সেখানে বেল বাজিয়ে ডাকার ব্যবস্থা। আবাসনে মোট ৪০০টি ফ্ল্যাট রয়েছে। আবাসিকের সংখ্যা ১১০০। তাঁদের মধ্যে ৪৭ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমানে ১৭ জন বাসিন্দা করোনা পজিটিভ।


এদিকে আবাসনে থাকেন ২২ জন চিকিৎসক ও ৫ জন নার্স, যাঁরা বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত। হাসপাতালের কাজের পর আক্রান্ত আবাসিকদের চিকিৎসার দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন তাঁরাই। গোটা আবাসনের সমস্ত আবাসিকই সাদরে এগিয়ে এসেছে মিনি হাসপাতালের সুষ্ঠুভাবে কাজ পরিচালনার জন্য।


শনিবারই শিউরে ওঠার মতো দৃশ্য দেখা গিয়েছে সাগর দত্ত মেডিকেল কলেজে। স্রেফ বেডের অভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পড়ে থেকে মৃত্যু হয় করোনা আক্রান্তের। অক্সিডেন থাকলেও বেড না থাকায় তারা নিরুপায় বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের সুপার। কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগণা, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, হাওড়া, হুগলির মতো জেলায় যেভাবে রোজ করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়ছে, সেখানে স,ব জেলাতেই চিন্তা হাসপাতালের বেড নিয়ে।


এরকম কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে নিজেদের আবাসনের মধ্যে কমিউনিটি সেন্টারকে কোভিডের মিনি হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তুলে আবাসিকরা যেভাবে একসঙ্গে করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছেন, তা নতুন এক দিশা দেখাচ্ছে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।