সন্দীপ সরকার ও ঝিলম করঞ্জাই, এবিপি আনন্দ : পুজোর মুখে পশ্চিমবঙ্গে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। গত ছ’দিন ধরে রোজই ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্তের পরিসংখ্যান টপকে যাচ্ছে সাড়ে তিন হাজারের গণ্ডী। স্বাস্থ্য দফতরের মঙ্গলবারের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৬৩১ জন।সোমবার ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হন ৩ হাজার ৫৮৩ জন।রবিবার ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৬১২।শনিবার ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত হন ৩ হাজার ৫৯১ জন। শুক্রবার ও বৃহস্পতিবার রাজ্যে ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হন ৩ হাজার ৫৭৩ এবং ৩ হাজার ৫২৬ জন।


সংক্রমণ অত্যাধিক হারে বাড়তেই হাসপাতালগুলিতে খালি বেডের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বেলেঘাটা আইডি-তে মোট করোনা বেড ১১৫টি। তার মধ্যে এখন খালি ১৫টি।

এমআপ বাঙুরে মোট করোনা বেড রয়েছে ৬৭০টি। এর মধ্যে বর্তমানে ১৭০টি বেড খালি। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৬৬০টি করোনা বেডের মধ্যে খালি ১৪৪টি। এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১১০টি করোনা বেডের মধ্যে খালি ৪৬টি।

করোনা চিকিৎসার জন্য যে বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে সরকার অধিগ্রহণ করেছে। সেখানেও অনেক বেডে রোগী ভর্তি রয়েছে। মঙ্গলবারের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কেপিসি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ২০০টি করোনা বেডের মধ্যে খালি মাত্র ৩৪টি। ডিসান হাসপাতালে ১১৩টি করোনা বেডের মধ্যে ৬৪টি খালি।

রাজ্যে সরকারি হাসপাতালগুলিতে মোট করোনা বেডের সংখ্যা ১২ হাজার ৭১৫। এর মধ্যে খালি রয়েছে ৭ হাজার ৯৫৬টি।

কারও সাধ্য থাকলে তিনি যদি ভাবেন বেসরকারি হাসপাতালে গেলেই বেড পাওয়া যাবে, তাহলে সেখানকার অবস্থাটাও দেখে নিন। মঙ্গলবারের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অ্যাপোলো হাসপাতালের ৭৮টি করোনা বেডের একটিও খালি নেই। সিএমআরআই-তে ৮৪টি করোনা-বেডের সবক’টি ভর্তি। চার্ণক হাসপাতালে ৮৪টি করোনা-বেডের মধ্যে খালি রয়েছে মাত্র ৯টি।ফর্টিস হাসপাতালের ৬৩টি করোনা বেডের একটিও খালি নেই।

দমদম আইএলএস  হাসপাতালে ৭৪টি করোনা বেডের মধ্যে খালি মাত্র দু’টি। পিয়ারলেসে ১০০টি করোনা বেডের সবক’টি ভর্তি।

অন্যান্য বেসরকারি হাসপাতালেও অধিকাংশ করোনা বেডে রোগী ভর্তি রয়েছে। মঙ্গলবারের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মেডিকায় করোনা বেডের সংখ্যা ১৬২টি। কিন্তু, একটিও খালি নেই। রুবি জেনারেল হাসপাতালে ৬০টি করোনা বেডের সবক’টি ভর্তি। আর এন টেগোরে ১০৫টি করোনা বেডের মধ্যে মাত্র চারটি বেড খালি। উডল্যান্ডসে ৭৫টি করোনা বেডের মধ্যে খালি রয়েছে ১১টি। ঢাকুরিয়া আমরিতে ৯৪টি করোনা বেডের মধ্যে মাত্র ২টি খালি।

কোঠারি হাসপাতালে আবার ১৩৭টি করোনা বেডের ৫২টি খালি।

সামনের সপ্তাহেই দুর্গাপুজো। অনেকে বলছেন, দুর্গাপুজো শুধু উৎসব নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বিরাট অর্থনীতির হিসেব। ফলে সাধারণ মানুষ বাইরে বেরোবেই। তবে মাথায় রাখতে হবে, সতর্কতায় ঢিলে দিয়ে আমরা যেন করোনাকে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার সুযোগ না করে দিই।