রাজা চট্টোপাধ্যায়, সুদীপ চক্রবর্তী ও করুণাময় সিংহ, জলপাইগুড়ি : ' দ্বিতীয় ঢেউয়ের কথা ভাবি তখন ২০-২২ হাজার প্রতিদিন ছিল, আশঙ্কা করছি এখন সেটা ৩৫ থেকে ৪০ হাজারে পৌঁছে যাবে' .... আশঙ্কাপ্রকাশ করে বলছেন খোদ উত্তরবঙ্গের জনস্বাস্থ্য আধিকারিক সুশান্ত রায়। গত ৭ দিনে প্রায় সাড়ে ১০ গুণ করোনার সংক্রমণ বেড়েছে রাজ্যে। একদিনে উত্তর দিনাজপুরে দৈনিক সংক্রমণ বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। আলিপুরদুয়ারেও ছবিটা এক।  দার্জিলিং, জলপাইগুড়িতেও হু হু করে বাড়ছে সংক্রমণ।

ঝড়ের গতিতে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি নিয়ে, রাজ্যের অন্যান্য অংশের মতোই উত্তরবঙ্গ নিয়েও চিন্তার ভাঁজ স্বাস্থ্য কর্তাদের কপালে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত রাজ্যে জারি বিধিনিষেধ জারি হয়েছে। উত্তরবঙ্গের অবস্থা সামাল দিতে টেস্ট, ভ্যাকসিনেশন ও পরিকাঠামো বৃদ্ধিতে নজর দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। জনস্বাস্থ্য আধিকারিকের দাবি, ' আগামী ২-৩ মাসে খুব ভয়ঙ্কর জায়গায় পৌঁছবে করোনা। এই পরিস্থিতিতে টেস্টিং বাড়াতে হবে, ভ্যাকসিনেশনে জোর দিচ্ছি। আপতকালীন পরিস্থিতি সামলাতে ভেন্টিলেটর ও অতিরিক্ত বেড - এর ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে' 

আরও পড়ুন :


করোনা চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়েছে অ্যান্টিবডি ককটেল ! কী এই ককটেল ? 


উত্তরবঙ্গে করোনার থাবা এবার জেলা প্রশাসনের শীর্ষ স্তরে। করোনা আক্রান্ত হলেন মালদার জেলাশাসক। করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে মালদার অতিরিক্ত জেলা শাসকের। দু’জনেই রয়েছেন হোম আইসোলেশনে। বাতিল করা হয়েছে মালদা বইমেলা। মালদার ইংরেজবাজারে শুরু হয়েছে সচেতনতামূলক প্রচার।

ঝড়ের গতিতে বাড়ছে সংক্রমণ। ওমিক্রনের ভয় ক্রমশ জাঁকিয়ে বসছে। তারপরও হেলদোল নেই নাগরিকদের একাংশের। রায়গঞ্জের মোহনবাটি বাজারে অধিকাংশ ক্রেতা বিক্রেতার মুখে নেই মাস্ক। দূরত্ব বিধি উড়িয়ে চলছে কেনাকাটা।  

উত্তরবঙ্গে ঝড়ের গতিতে সংক্রমণের মাঝেই একের পর এক পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ হল কাল থেকে। পাহাড়ে এখনও হোটেল খোলা থাকলেও চিড়িয়াখানা, রক গার্ডেন, বিভিন্ন পার্ক বন্ধ। তবে এর মধ্যেই অনেকে আবার পাহাড়ে হাজির হচ্ছেন! পাহাড়ের অন্যতম আকর্ষণ টয় ট্রেন অবশ্য এখনও চলছে। কালিম্পং থেকে অবশ্য পর্যটকরা ফিরতে শুরু করেছেন।  বিভিন্ন হোটেল বা হোম স্টে-তে বুকিং বাতিল করছেন অনেকেই।  আর করোনার মধ্যে বাড়ি ফেরার এই তাড়াহুড়োর সুযোগ নিয়ে, পাহাড় থেকে সমতলে নামার গাড়ির ভাড়াও অনেকটা বাড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ পর্যটকদের।