ঝিলম করঞ্জাই ও অনির্বাণ বিশ্বাস, কলকাতা :  গতবছর আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর, তাঁকে দেওয়া হয়েছিল অ্যান্টিবডি ককটেলের ডোজ।  সম্প্রতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর, তাঁকে মনোক্লোনাল ককটেল অ্যান্টিবডির ডোজ দেওয়া হয়। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকেও এই ককটেল অ্যান্টিবডি দেওয়া হয়েছে। 


কিন্তু, এই ককটেল অ্যান্টিবডি আসলে কী? 
বিশেষজ্ঞদের মতে, এটা আদতে অ্যান্টিবডির মিশ্রণ, যা ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের বিরুদ্ধে কাজ করে। ফলে রোগীর শরীরে ভাইরাসের প্রভাব কমে যায়।


তবে বেসরকারি হাসপাতালে এই ককটেল অ্যান্টিবডি থেরাপি অত্যন্ত ব্যয়সাপেক্ষ। এতটাই, যা অনেকের সাধ্যের বাইরে। এই প্রেক্ষাপটে চিকিৎসক মহলের একাংশেই এও প্রশ্ন উঠছে, অ্যান্টিবডি ককটেল থেরাপি কি একান্তই প্রয়োজনীয়? নাকি তা নিয়ে ব্যবসা হচ্ছে? করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়, বেলেঘাটা আইডি, শম্ভুনাথ পণ্ডিত, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগীদের উপরে এই ককটেল থেরাপির পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়েছিল। যদিও সূত্রের খবর, পর্যাপ্ত রোগী পাওয়া না যাওয়ায়, অ্যান্টিবডি ককটেলের অর্ধেকের বেশি ভায়াল, মেয়াদ ফুরিয়ে নষ্ট হয়ে যায়। এখন সেই থেরাপিই প্রয়োগ করা হচ্ছে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায়। 

আরও পড়ুন :


 রাজ্যে ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৭৮ জন


সোমবারও রাজ্যে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪৩৯। এক সপ্তাহ পর, সোমবার সেটা ৬ হাজারের ঘরে। অর্থাৎ এক সপ্তাহে বাংলায় দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ল বারোশো পঁচাশি শতাংশ। তবে এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতির মধ্যেও পুরভোট পিছোচ্ছে না। নির্দিষ্ট দিনেই হবে ৪ পুরসভার ভোট। জানিয়ে দিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন।

করোনার বাড়বাড়ন্ত দেখে, আগেই বর্ষবরণের উৎসব নিষিদ্ধ করেছিল দিল্লি, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, তামিলনাড়ু, কেরল, ওড়িশা। উল্টোদিকে, কলকাতার ছবিটা ছিল এরকম। নাইট কার্ফু ছিল না। 


বিধিনিষেধ না থাকায়, নিরন্তর সতর্কবার্তাকেও বুড়ো আঙুল দেখানো হয়েছে! আর এই আবহেই সোমবার ২৪ ঘণ্টায়, পশ্চিমবঙ্গে করোনা আক্রান্ত হলেন ৬ হাজার ৭৮ জন। যেটা এক সপ্তাহে রকেটের গতিতে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। রবিবারের তুলনায় সোমবার দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা সামান্য কমলেও, তা ৬ হাজারের ঘরেই রয়েছে। 

তবে কমেছে টেস্টও। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, রবিবারের তুলনায় সোমবার ৭ হাজার ৬০৩টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। রবিবার রাজ্যে পজিটিভিটি রেট ছিল প্রায় ১৬ শতাংশ। সোমবার সেটা বেড়ে হয়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। সোমবারের বুলেটিন অনুযায়ী, রাজ্যে নতুন করে মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের। রবিবার এই সংখ্যাটা ছিল ৮।