অমিতাভ রথ, অর্ণব মুখোপাধ্যায়, ঝাড়গ্রাম ও কলকাতা: গো-মূত্র পান করে ঠাঁই হাসপাতালে!করোনা-মোকাবিলায় দেশজুড়ে গোমূত্র পানের আয়োজন করছে কোনও কোনও মহল। বাদ যায়নি এই বাংলাও। গোমূত্র খাওয়ানোয় মঙ্গলবারই গ্রেফতার হয়েছেন বিজেপি নেতা নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়। হুগলির ডানকুনিতে গোমূত্র, গোবর বিক্রির ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন দুধ ব্যবসায়ী।
করোনা নিয়ে যখন সচেতনতা বৃদ্ধিতে জোর দিচ্ছেন চিকিত্সক ও বিজ্ঞানীরা, খোঁজ চলছে প্রতিষেধকের, তখনও অনেকের মন থেকে দূর হয়নি কুসংস্কার।
সেই কুসংস্কারের কবলে পড়লে তার যে কী অবস্থা হয়, তা এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন ঝাড়গ্রামের শিবু গড়াই।
বর্তমানে ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের বিছানায় ঠাঁই হয়েছে ওই কাপড় ব্যবসায়ীর।
তিনি বলেছেন, টিভিতে দেখেছিলাম। ভেবেছিলাম ঠিক হয়ে যাবে। তাই গতকাল খেয়েছিলাম, গলা-বুক জ্বালা করছিল, জল খেয়েও কমেনি, তাই হাসপাতালে আসি।
অসুস্থ ব্যক্তির দাবি, তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন। কিন্তু প্রচার দেখেই গোমূত্র পান করেছিলেন।


কিন্তু এই ঘটনার পরেও নিজেদের অবস্থানে অনড় গেরুয়া শিবির। উল্টে অসুস্থতার কারণ হিসেবে বিজেপির স্বাস্থ্য সেলের সদস্য কী যুক্তি খাড়া করেছেন দেখে নেওয়া যাক।
ঝাড়গ্রাম বিজেপির স্বাস্থ্য সেলের সদস্য কৃষ্ণ প্রসাদের দাবি,  দেখতে হবে উনি কতটা পরিমাণ পান করেছেন। হয়ত বেশি খেয়ে ফেলেছেন।
করোনা মোকাবিলায় এই ধারণা যে সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক, তা প্রমাণ করতে ময়দানে নেমেছে তৃণমূল।

সোমবার যেখানে বিজেপি নেতার উদ্যোগে গরুর পুজো ও গো-মূত্র পান করতে দেখা গিয়েছিল, বুধবার জোড়াসাঁকোর ঠিক সেই এলাকাতেই মাস্ক ও সাবান বিলি করেন শাসক দলের কাউন্সিলর।
কলকাতা পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর ইলোরা সাহা বলেন,হ্যান্ড স্যানিটাইজার তো ভালই, কিন্তু বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না, তাই মাস্ক ও ছোট সাবান দিচ্ছি।
এই জায়গাটাকেই বেছে নিলেন কেন? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন, কারণ কয়েক দিন আগে এখানেই এক নেতা গোমূত্র পান করিয়েছিলেন। সেটা যে কতটা অবৈজ্ঞানিক, ভ্রান্ত ধারনা সেটাই বোঝাতে চাইছি।

সোমবার গোমূত্র পান করেছিলেন এক দোকানদার।এদিন সেই ব্যবসায়ী মাস্ক নেন তৃণমূল কাউন্সিলরের কাছ থেকে।

অন্যদিকে, বুধবার ভবানীপুরে ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অসীমকুমার বসু করোনা-সচেতনতার প্রচার করেন। বিলি করেন মাস্ক।