করোনায় দেশজুড়ে বেলাগাম...বেসামাল পরিস্থিতি!  সবটুকু দিয়েও প্রিয়জনকে বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টা! মহামারীকালে প্রিয়জনের সুস্থতায় যখন বিনিদ্র রাত কাটাচ্ছেন পরিজনেরা! 
তখন এ যেন অন্য ভারত! করোনা আক্রান্ত আশঙ্কায় অশীতিপর বৃদ্ধাকে তাজপুরের সমুদ্র সৈকতে বসিয়ে পালিয়ে গেলেন নাতি! 
থামছে না মৃত্যু মিছিল! 
ফুরিয়ে যাচ্ছে মৃতদেহ সৎকারের কাঠ! করোনাকালে তবে কি সেই আগুনেই পুড়ে খাক হয়ে যাচ্ছে সম্পর্ক, আত্মীয়তাও!  প্রশ্নটাই এবার তুলে দিল পূর্ব মেদিনীপুরের তাজপুরের এই ছবি! 
বৃহস্পতিবার রাত। ঘড়ির কাঁটায় তখন প্রায় ১১টা! সংক্রমণের ভয়ে এমনিতেই এখন পর্যটক শূন্য সমুদ্র সৈকত! তার মধ্যে এত রাতে এক বৃদ্ধাকে একা বসে থাকতে দেখে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। কিন্তু করোনা আক্রান্ত সন্দেহে তাঁর কাছে ঘেঁষার সাহস পাচ্ছিলেন না কেউ। 


খবর দেওয়া হয় মন্দারমণি কোস্টাল থানার পুলিশকে! পুলিশ ও স্থানীয়দের চেষ্টায় বৃদ্ধাকে ভর্তি করা হয় দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। উদ্ধারের সময় বৃদ্ধার হাতে স্যালাইনের চ্যানেলও দেখা যায়! 
মন্দারমণির স্থানীয় বাসিন্দা সুকুমার সরকার বলেন, '' রাতের বেলা বসে থাকতে দেখি, সন্দেহ হয়, খবর দিই পুলিশকে, তারপর উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি হয়, হাতে স্যালাইনের চ্যানেল দেখা যায়, নিজের নাম ছাড়া কিছু বলতে পারেননি''

 কিন্তু কোথা থেকে এলেন এই অশীতিপর বৃদ্ধা! পুলিশ সূত্রে খবর, বৃদ্ধার নাম গীতা। তিনি কলকাতার শ্যামপুকুর এলাকার বাসিন্দা! তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, বিকেল ৪টে নাগাদ মেয়ে ও নাতির সঙ্গে গাড়িতে চেপে তাজপুর পৌঁছন ওই বৃদ্ধা। সৈকতে তাঁকে নামিয়ে জিনিস কেনার নাম করে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যান নাতি।  তারপর আর ফেরেননি! হাসপাতাল সূত্রে খবর,  বৃদ্ধার করোনা পরীক্ষা হয়েছে। 

কিছুদিন আগেই আরেকটি অমানবিক ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছিল কলকাতাকে। গড়ফায় বাড়ির সামনে করোনা আক্রান্তের মৃতদেহ ফেলে পালাল অ্যাম্বুলেন্স। কাঠগড়ায় যাদবপুরের কেপিসি হাসপাতাল। পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে রোগীর মৃত্যু হয়। কিন্তু রোগীকে ভর্তি নেওয়া হয়নি। এর পরেই মৃতদেহ বাড়ির সামনে ফেলে পালিয়ে যায় অ্যাম্বুলেন্স।