সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা : শুধু সরাসরি করোনা রোগীদের দেখাই নয়, সেইসঙ্গে নিজেই ওষুধ থেকে খাবার সবকিছুর ব্যবস্থাও করছেন খোদ চিকিৎসক। ভয়ঙ্কর করোনা পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন হয়ে, অনেক চিকিৎসকই সরাসরি করোনা রোগী দেখছেন না। অনলাইনে চিকিৎ‍সার উপায় বলে দিচ্ছেন। কিন্তু এর ব্যতিক্রমও আছে। যেমন বারাসাতের চিকিৎসক কৌশিক মিশ্র। যিনি শুধু করোনা রোগীকে দেখাতেই থামাচ্ছেন না তাঁর কর্তব্য। সমাজের উদ্দেশ্যে বার্তা দেওয়ার লক্ষ্যে নিজেই রোগীর কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন খাবার-ওষুধ।


প্রাথমিকভাবে যথাযত চিকিৎসা পেলে করোনা আক্রান্তদের শারীরিক অবস্থা কম খারাপ হয়। তাই এই সময়েও চেম্বারে সরাসরি করোনা রোগী দেখছেন বারাসাতের চিকিৎসক কৌশিক মিশ্র। তাঁকে সহযোগিতা করছেন এলাকারই দন্ত চিকিৎসক সুমিতকুমার সাহা। তারসঙ্গেই চলছে ওষুধ-খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজ।


কেন এমন পদক্ষেপ জানতে চাইলে চিকিৎসক কৌশিক মিশ্র বলেছেন, আক্রান্ত হওয়ার প্রথম দিকে রোগীকে সরাসরি দেখলে, ঠিকঠাক চিকিৎসা করা হলে, ওষুধ দিলে পরিস্থিতি খারাপ হয় না, হাসপাতালের উপর চাপ কম পড়ে। এই পরিস্থিতি আরেক সতীর্থকেও পাশে পেয়েছেন চিকিৎসক কৌশিক মিশ্র। সেই দন্ত চিকিৎসক সুমিতকুমার সাহাও রোগীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ওষুধ-খাবার পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে সচেতন করছেন।


এই মুহূর্তে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় বেসামাল দেশ। একই অবস্থা আমাদের রাজ্যেও। সব থেকে খারাপ অবস্থা যে জেলাগুলোর তার মধ্যে অন্যতম উত্তর ২৪ পরগনা। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টার রাজ্যে এই প্রথম দৈনিক করোনা সংক্রমণ ছাড়িয়ে গিয়েছে ২০ হাজার। যার মধ্যে প্রায় ৪ হাজার নতুন সংক্রমণ শুধু উত্তর ২৪ পরগণাতেই। এই পরিস্থিতিতে চাপ বাড়ছে হাসপাতালগুলির উপর। কিন্তু যেভাবে কৌশিক মিশ্র, সুমিতকুমার সাহার মতো চিকিৎসরা বাড়তি দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছেন, তাতে আশার আলো দেখছেন সকলেই।


সব মিলিয়ে পৃথিবীর যখন ঘোর অসুখ, মানুষ যখন বিপদে, তখন পাশে সেই মানুষই।