রাজা চট্টোপাধ্যায়, রাজগঞ্জ: করোনা আবহে চাহিদা আকাশছোঁয়া। প্রয়োজনের সময় মিলছে কোথায়? অ্যাম্বুল্যান্সের অভাবে বহু ক্ষেত্রে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই মৃত্যু হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে। এই পরিস্থিতিতে এগিয়ে এলেন জলপাইগুড়ির এক শিক্ষিকা। জমানো বেতনের টাকায় অ্যাম্বুল্যান্স কিনে তুলে দিলেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাতে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেসামাল দেশ। করোনা কাড়ছে প্রাণ। কখনও মৃতদেহ ভাসছে নদীতে। কখনও আবার অক্সিজেনের অভাবে রোগী মৃত্যু। এমনকি করোনা আবহে অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে অমানবিকতার ভুরিভুরি অভিযোগ। তবে কি মানবিকতারও মৃত্যু ঘটাচ্ছে ভাইরাস? ঘটনাপ্রবাহ এই প্রশ্নই তুলে দিয়েছে। কোথাও অ্যাম্বুল্যান্স না পাওয়ায় রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। কোথাও পড়ে নষ্ট হচ্ছে অ্যাম্বুল্যান্স। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে নজির গড়লেন জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জের মান্তাদাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা কেয়া সেন। সমাজ গড়ার দায়িত্ব তাঁর কাঁধে। সেই ভাবনা থেকেই কিনলেন অ্যাম্বুল্যান্স। মঙ্গলবার জেলা পরিষদের উদ্যোগে সেই অ্যাম্বুল্যান্স তুলে দেওয়া হল স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাতে।
রাজগঞ্জ শিক্ষিকা কেয়া সেন। শিক্ষিকার দাবি, করোনা আবহে স্কুল বন্ধ থাকলেও, বেতন মিলেছে। তাই ম্যানেজমেন্ট পড়ুয়া ছেলের উত্সাহে এই দুঃসময়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে চেয়েছেন। কেয়া সেন বলেন, গত দেড়বছর ঘরে বসে মাইনে নিচ্ছি। বেতন বন্ধ হয়নি। কোথাও মানুষ খেতে পাচ্ছে না। অ্যাম্বুল্যান্স, অক্সিজেন পাচ্ছে না। খারাপ লাগছে। তাই বেতনের টাকা থেকে এটা কিনে দিলাম। সবাই এগিয়ে আসুন।
করোনা-যুদ্ধে শিক্ষিকাকে পাশে পেয়ে খুশি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার সুমন বসু রায় বলেন, এতবড় মনের পরিচয় দিলেন ভাবাই যায় না। লকডাউন পরিস্থিতিতে এই সহায়তা বড় ব্যাপার। দিনরাত বিনা খরচে পরিষেবা দেব। জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশচন্দ্র ঢালি বলেন, ৪ তারিখ জয়েন করেছি। এই প্রথম এতবড় পাওনা। এই শিক্ষিকা এতবড় কাজ করলেন। তুলনা হয় না। প্রশাসনকে সাহায্য করার জন্য ধন্যবাদ। স্কুল শিক্ষিকার এই উদ্যোগ অন্যদের অনুপ্রেরণা জোগাবে, আশাবাদী প্রশাসনও।