অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার : ৯০ কিলোমিটার পাহাড়ি রাস্তায় ২০ ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস ট্রেকিং। কোনও অ্যাডভেঞ্চারের গল্প নয়। নিতান্তই পেটের টানে ঘরে ফেরার কাহিনি। ৯০ কিলোমিটার পাহাড়ি পথ পেরিয়ে ভুটান থেকে বাংলায় ফিরলেন ৩৮ পরিযায়ী শ্রমিক। লকডাউন থাকায় মিলছিল না প্রাপ্য মজুরি। সেই কারণেই চোরাপথে পালিয়ে আসতে হয়েছে, দাবি শ্রমিকদের। কোভিড পরীক্ষার পর সবাইকে বাড়ি ফেরাল প্রশাসন।


বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ারের জয়গাঁ সীমান্তে ৩৮ জন পরিযায়ী শ্রমিককে আটক করে পুলিশ। ধৃতরা দাবি করেন, তাঁরা ভুটান থেকে পালিয়ে এসেছেন।কিন্তু কেন হঠাত্‍ প্রতিবেশী রাষ্ট্রটি থেকে পালিয়ে আসতে হল?


শ্রমিকদের দাবি, এক ঠিকাদার সংস্থার হয়ে কাজ করতে ২৫০ জন শ্রমিক ভুটানের চুখাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু গত এক মাস ধরে সেখানে লকডাউন শুরু হওয়ায় সমস্যার সূত্রপাত হয়। অভিযোগ, লকডাউনের সময় তাঁদের প্রাপ্য মজুরি দেওয়া হয়নি। এরপরই ভুটান থেকে পালিয়ে বাংলায় ফেরার পরিকল্পনা করেন এই ৩৮ জন।


ভুটান থেকে পালিয়ে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের দলে থাকা ধীরাজ কার্জি বলছিলেন, 'ভুটান থেকে পালিয়ে আসা ৩৮ জন শ্রমিকের মধ্যে কয়েকজন আলিপুরদুয়ারের বাসিন্দা। বাকিদের বাড়ি জলপাইগুড়িতে। সরকারি তত্ত্বাবধানে এদের প্রত্যেকের কোভিড পরীক্ষা করা হয়। পরে সবাইকে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করে জেলা প্রশাসন।'


আলিপুরদুয়ারের কালচিনির বিডিও প্রশান্ত বর্মন বলেছেন, 'ভুটানে আটকে থাকা বাকি পরিযায়ী শ্রমিকদের বিষয়ে খোঁজ খবর শুরু করছে প্রশাসন।'


গোটা দেশ এই মুহূর্তে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে লন্ডভন্ড। গতবছর কোভিডের প্রথমবারের ধাক্কার মতো এবারে কেন্দ্রীয় সরকার লকডাউনের পথে হাঁটেনি। বরং সেই দায়িত্ব তারা ছেড়ে দিয়েছিল বিভিন্ন রাজ্য সরকারেরই হাতে। এই মুহূর্তে কোভিডের শৃঙ্খল ভাঙতে দেশের একাধিক রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লকডাউনের পথে হেঁটেছে। যেখানে সম্পূর্ণ লকডাউন চালু হয়নি সেখানেও আংশিক লকডাউনে যথেষ্ট কড়াকড়ি।


আর এই লকডাউনের মাঝেই ফের একবার কর্মহীন হয়ে পড়েছেন একাধিক পরিযায়ী শ্রমিক। নেহাত পেটের টানে তারা ফের একবার বাধ্য হয়ে ঘরে ফেরার পথ ধরেছেন।