কলকাতা: ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের পর, যে কটি উপনির্বাচন হয়েছে, তাতে স্পষ্ট, রাজ্যে ক্রমেই শক্তিবৃদ্ধি করছে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলও যেমন বিজেপির মোকাবিলায় ঝাঁপাচ্ছে, তেমনই সিপিএমেরও লক্ষ্য, বিজেপিকে আটকানো।
সিপিএম সূত্রে খবর, ক’দিন আগে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বলেন, বিজেপির তোলা ইস্যুগুলি নিয়ে, সাধারণ মানুষের মধ্যে চর্চা হচ্ছে। এই ইস্যুগুলিতে আমাদের কী প্রতিক্রিয়া, তা নিয়ে প্রচার দরকার এবং একটি পুস্তিকা প্রকাশ করা দরকার।
সিপিএম নেতৃত্বের একাংশও মনে করছে, নানা ইস্যুতে তাদের তৃণমূল সরকার বিরোধী আন্দোলন, জনমানসে ক্ষোভ তৈরি করলেও, আদতে ডিভিডেন্ড চলে যাচ্ছে বিজেপির ঘরে!
এই পরিস্থিতিতে বঙ্গ সিপিএমের সিদ্ধান্ত, বিজেপি যে সব বিষয় নিয়ে প্রচার করছে, তার মোকাবিলা করে ধারাবাহিক প্রচারে যাবে দল। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নির্দেশে খুব তাড়াতাড়ি একটি পুস্তিকাও প্রকাশ করতে চলেছে আলিমুদ্দিন। সূত্রের খবর, বিজেপির তোলা একাধিক ইস্যুর প্রসঙ্গ থাকবে ওই পুস্তিকায় যেমন - ৩৭০ ধারা ও অভিন্ন দেওয়ানি বিধি।
ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা বৃদ্ধি-সহ বিভিন্ন বিষয়ে বিজেপি যে প্রচার করছে, যুক্তি সহকারে তার পাল্টা প্রচার থাকবে এই পুস্তিকায়। সিপিএম সূত্রে খবর, এই বইয়ে তৃণমূল বিরোধিতা সেভাবে থাকছে না।
সিপিএম নেতৃত্ব স্বীকার করছে, একের পর এক নির্বাচন থেকে স্পষ্ট, বামেদের ভোট ভেঙে বিজেপির দিকে চলে যাচ্ছে! এই ক্ষয় রুখতে সিপিএমের লক্ষ্য, বিজেপি যে প্রশ্নগুলি তুলেছে, সেগুলিকে যথাযথভাবে মোকাবিলা করা। যার সাম্প্রতিক উদাহরণ, দক্ষিণ কাঁথির উপ নির্বাচন। তাই তৃণমূলকে আক্রমণের পাশাপাশি, বিজেপিকেই মূল নিশানা করে কোমর বাঁধতে চলেছে আলিমুদ্দিন।
প্রশাসন সূত্রে খবর, আগামী বছরের জানুয়ারির মাঝামাঝি রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন হতে পারে। সে মাথায় রেখে, বিজেপি বিরোধী নতুন স্লোগানও তৈরি করছে রাজ্য সিপিএম!
বুধবারই শেষ হয়েছে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে, গোটা দেশে বিজেপি-ই এখন প্রধান শত্রু। তাই যে কোনও মূল্যে বিজেপিকে ঠেকাতে হবে।
বসে নেই রাজ্যের শাসক দলও! পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতিতে এতটুকুও খামতি রাখতে চাইছেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সূত্রে খবর, ২০১৬ সালের ভোটে, রাজ্যের ৭২ হাজার বুথে যে ৪-৫ জন করে দলীয় কর্মী দায়িত্ব সামলেছেন, তাদের নাম, ফোন নম্বর ও ঠিকানা চাওয়া হয়েছে জেলা সভাপতিদের কাছ থেকে।
কারণ সূত্রের খবর, বিজেপির শক্তিবৃদ্ধির পাশাপাশিই, তৃণমূল নেতৃত্বের অন্যতম চিন্তার কারণ, নিচুতলায় দলের গোষ্ঠীকোন্দল। তাদের আশঙ্কা, পঞ্চায়েত ভোটে টিকিট না পেলে অনেকে বিজেপির দিকে চলে যেতে পারে, সেই পরিস্থিতি এড়াতে বুথের দায়িত্ব সামলানো প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ কর্মীর সঙ্গে এখন থেকেই যোগাযোগ তৈরি করতে চাইছে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব।
তৃণমূল-সিপিএমের এই তৎপরতাকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। অমিত শাহকে দিয়ে বিজেপিও এ রাজ্যে তাদের বুথ চলো কর্মসূচির উদ্বোধন করছে। যার প্রধান আকর্ষণ হল, খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুরে অমিত শাহের ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত।
পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপিকে রুখতে ঘুঁটি সাজাচ্ছে বাম, তৃণমূল
ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ
Updated at:
20 Apr 2017 09:50 PM (IST)
NEXT
PREV
রাজ্য (states) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেইলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে ।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -