কলকাতা ও শিলিগুড়ি: আগেই মার খেয়েছিল পর্যটন। এবার চা। পাহাড়ে অচলাবস্থার গভীর প্রভাব চা শিল্পে।
দার্জিলিং টি। জন্ম বাংলায়, বেড়ে ওঠা বিশ্বে। যার এক চুমুক মানেই যেন ‘সব পেয়েছির দেশে’!
পাহাড়ে অশান্তির আগুনে সেই চা শিল্পই এখন বড়সড় সঙ্কটের মুখে! দেখা দিয়েছে বিপুল আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা!
দার্জিলিঙের চা-এর এমনিতেই বিশ্বজোড়া সুনাম! কিন্তু সেরারও তো সেরা থাকে!
পাহাড়ের ৮৭টি চা বাগানগুলিতে বছরে পাঁচটি ফ্লাশ ওঠে।
ফার্স্ট ফ্লাশ ওঠার সময় হল মূলত মার্চ মাস। যা স্প্রিং ফ্লাশ নামে পরিচিত।
১ জুন থেকে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে ওঠে সেকেন্ড বা সামার ফ্লাশ।
বাকি তিনটি হল মনসুন ফ্লাশ, অটাম ফ্লাশ, উইন্টার ফ্লাশ
এর মধ্যে বিদেশে দার্জিলিংয়ের সেকেন্ড ফ্লাশ চায়ের কদর অত্যন্ত বেশি! যা থেকে প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা।
দার্জিলিং চায়ের ২০ শতাংশই সেকেন্ড ফ্লাশ।
লভ্যাংশের ৪০ শতাংশ আসে এই সেকেন্ড ফ্লাশ চা রফতানি করেই।
গত কয়েক মরশুম ধরেই মার খাচ্ছে ফার্স্ট ফ্লাস চায়ের উৎপাদন। তাই সেকেন্ড ফ্লাশ চাই এখন দার্জিলিংয়ের চা শিল্পের প্রাণভোমরা। আর মোর্চার লাগাতার বনধের ফলে দার্জিলিংয়ের প্রায় সাতাশিটি চা বাগান বন্ধ হয়ে থাকায় সেই সেকেন্ড ফ্লাশ চাই এখন বিপন্ন।
সূত্রের দাবি, মোর্চার আন্দোলনের জেরে ইতিমধ্যেই দার্জিলিংয়ের চা শিল্পের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১০০ কোটি টাকা
বনধ-অশান্তি চলতে থাকলে ক্ষতির পরিমাণ যে কোথায় গিয়ে দাঁড়াতে পারে, তা বোঝাতে একটা ছোট্ট পরিসংখ্যানই যথেষ্ট।
দার্জিলিঙের চা বাগানগুলিতে প্রতিদিন প্রায় ৯০ হাজার কেজি চা উৎপন্ন হয়।
এর মধ্যে ৫০ শতাংশই রফতানি হয়।
নিলামে কেজি প্রতি গড় দাম ওঠে ৫০০ টাকা।
চা বিদেশে বিক্রি হলে নিলামে দাম ওঠে আরও বেশি।
অর্থাৎ একদিন বাগান বন্ধ থাকলেই ক্ষতি কমপক্ষে সাড়ে চার কোটি টাকা
অর্থাৎ যত বনধ, তত ক্ষতি। এই পরিস্থিতিতে চরম সঙ্কটে দার্জিলিংয়ের চা শিল্প। অনিশ্চয়তার মুখে ২ লক্ষ চা শ্রমিকের ভবিষ্যত।