শিলিগুড়ি ও কলকাতা: নামেই সর্বদল। অথচ উপস্থিত সাকুল্যে তিনটি দল। তৃণমূল ছাড়া বাকি দুই দল হল বিএসপি আর এনসিপি। যাদের বিধানসভায় একজন বিধায়ক পর্যন্ত নেই। বৈঠকে গরহাজির মোর্চা কিংবা জিএনএলএফ-ও। পাহাড়ে গিয়ে যে ১৫টি পর্ষদ গঠন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী, তার মধ্যে রাজ্য সরকারের ডাকা বৈঠকে হাজির মাত্র দুটি। কামি উন্নয়ন পর্ষদ এবং সংখ্যালঘু উন্নয়ন পর্ষদ।

অথচ শনিবারই পাহাড়ের ১৫টি উন্নয়ন পর্ষদের প্রতিনিধি এবং পুলিশ প্রাসনের শীর্ষ কর্তাদের নিয়ে নবান্নে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিনের সর্বদলে সেই তারাই গরহাজির! সর্বদলে তৃণমূল ছাড়া প্রথম সারির কোনও দলই না থাকা সত্ত্বেও, স্বরাষ্ট্রসচিবের গলায় ইতিবাচক সুর! মলয় দে বলেছেন, ‘আলোচনার রাস্তা খোলা আছে। আনকন্ডিশনাল আলোচনা চাই। আজ কেউ আসেনি। আশা করি ভবিষ্যতে আসবে। কলকাতায় বৈঠক হতে পারে।’ সর্বদলে কোনও বিরোধী দল না থাকা সত্বেও, আশা ছাড়ছে না তৃণমূলও। পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘ব্যক্তিগত কারণে কেউ কেউ আসেনি। খোঁজ নিয়ে দেখব। গাঁধীজির আন্দোলনেও শুরুতে কেউ থাকত না, পরে আসত।’

মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে নেই! পাহাড়ের কোনও দল বৈঠকে নেই! তাহলে এ আবার কীসের সর্বদল বৈঠক? প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অশোক ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘যাদের নিয়ে সমস্যা, তারা না থাকলে কোনও মানেই নেই। ত্রিপাক্ষিক করতে হবে।’ কংগ্রেস  মুখ্য সচেতক  মনোজ চক্রবর্তী বলেছেন, ‘যখন গোর্খাল্যান্ডের দাবি উঠছে, মমতা তখন নেদারল্যান্ডসে। এ ধরনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীকে থাকতে হয়।’ মোর্চার শরিক বিজেপি-র গলাতেও একই সুর। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, ‘সর্বদল বৈঠক ব্যর্থ হওয়ার দায় রাজ্য সরকারের। রাজ্যের সমস্যা নিয়ে বৈঠক ডাকা হল জেলা স্তরে। রাজনৈতিক একটা বিষয়ে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হল আমলা স্তরে। যিনি সমস্যা তৈরি করলেন, তিনিই বৈঠকে নেই।’

এদিকে, রাজ্য সরকারের ডাকে যখন শিলিগুড়িতে বৈঠক চলছে, তখন প্রশাসনের ওপর চাপ তৈরি করতে দার্জিলিংয়ে একযোগে মিছিল করে পাহাড়ের রাজনৈতিক দলগুলি। সবমিলিয়ে পাহাড়-পরিস্থিতি শান্ত করে সর্বদল বৈঠক ডাকা হলেও, সেই বৈঠক থেকে ফলপ্রসূ কিছু বের হল না।