মেদিনীপুর: করোনা আবহেও সক্রিয় সাইবার জালিয়াতি। প্রৌঢ়র পেনশনের টাকা ব্য়াঙ্কে ঢোকা মাত্রই ক্রেডিট হয়ে যাচ্ছে বারবার। যা কার্যত উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে অসহায় পরিবারের কাছে। বারবার পুলিশের দ্বারস্থ হয়েও সুরাহা না মেলার অভিযোগ পরিবারের। ঘটনাটি ঘটেছে মেদিনীপুরের লালদিঘিতে।
লালদিঘির বাসিন্দা ৫০ বছর বয়সী মনিকা দাস এবং তাঁর স্বামী রবীন্দ্রনাথ দাস। তিনি জানান, চলতি বছর মার্চ মাসে প্রথম ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও হয়ে যায় স্বামী রবীন্দ্রনাথ দাসের পেনশন বাবদ পাওয়া ২৪৯০০ টাকা।উধাও হয়ে যাচ্ছে ছেলের প্রতিবন্ধী ভাতার টাকাও।
অথর্ব স্বামীর পেনশনের টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ক্রেডিট হওয়া মাত্রই সেই টাকা উধাও হয়ে যাচ্ছে দীর্ঘ দু মাস ধরে, এমনই অভিযোগ মেদিনীপুর শহরের লালদিঘি এলাকার বাসিন্দা মনিকা দাসের। এর পরেই প্রথমে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার রাজাবাজার শাখায় একথা জানান ওই প্রৌঢ়া। সাইবার ক্রাইম থানায় লিখিত অভিযোগ জানানোরও পরামর্শ দেওয়া হয় ব্যাঙ্কের তরফে। এরপর মাঝে একটা মাস বাদ দিয়ে ফের মে মাসে উধাও হয়ে যায় অথর্ব স্বামীর পেনশনের টাকা। মাথায় হাত পড়ে যায় মহিলার।
শুরু হয় হয়রানি ফের ব্যাঙ্কের দ্বারস্থ হলে থানায় যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। থানার থেকে মহিলাকে পাঠানো হয় ফের ব্যাঙ্কেই। সেই থেকেই প্রায় নিত্যদিন ব্যাঙ্ক ও থানার চক্কর কাটছেন মনিকা দাস। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও সুরাহা মেলেনি।
প্রসঙ্গত, রবীন্দ্রনাথ দাস কোলাঘাট থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্টের কর্মী ছিলেন। ২০০৭ সালের জুলাই মাসে অবসর নেন তিনি। বছর কয়েকআগেই প্যারালাইজ্ড হয়ে যান রবীন্দ্রনাথ। বছর ২- র একমাত্র ছেলে সমীরও বিশেষভাবে সক্ষম। অভিযোগ, মাস দুয়েক ধরে ছেলের ভাতা বাবদ প্রাপ্য টাকাও উধাও হয়ে যাচ্ছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে। এ ভাবে জালিয়াতির ফলে ভাঁড়ার শূন্য মহিলার পরিবারে।
করোনা কালে দিনগুজরান হবে কীভাবে! চিন্তায় ঘুম উড়েছে গোটা পরিবারের। অন্যদিকে অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশের এক কর্তা। মহিলার নিরক্ষরতার সুযোগ নিয়েই কি এমন জালিয়াতি! খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে মুখ খুলতে নারাজ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।
পরিবারকে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূল নেতা সৌরভ বসুর দাবি, 'এমন অসহায় পরিবারের করুণ অবস্থায় মানবিকতার পরিচয় দিয়ে তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন প্রশাসন ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষের। তবে দলের তরফে মহিলার পাশে যে থাকা হবে তাও কার্যত পরিষ্কার করে দেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা। যতদিন না সমস্যা মিটবে ততদিন দলের পক্ষ থেকে তাদের খাওয়ার এবং ওষুধের ব্যবস্থা করা হবে।