কলকাতা: ঘূর্ণিঝড় ইয়াস কেড়েছে ঘরবাড়ি। সর্বস্ব ভেসে গেছে জলে। এখন জীবনটুকু সম্বল। দলে দলে মানুষ চলেছেন শহরের দিকে। বোঁচকায় বাঁধা সংসার। ভিটেহারা মানুষের সঙ্কটের এই ছবি উঠে এসেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে।
গত বুধবার ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আর ভরা কটালের জোড়া ধাক্কায় লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে সুন্দরবন। নদী বাঁধ ভেঙে নোনা জল ঢুকেছে একের পর এক গ্রামে।যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। খাবার নেই, জল নেই। এরমধ্যে অভিযোগ, ত্রাণও পর্যাপ্ত নয়।
এক বাসিন্দা বললেন, ইয়াস চলে যাওয়ার পর তিনদিন কেটে গিয়েছে। এখন ত্রাণটান কিছুই নেই, খাবার দাবার পাওয়া যাচ্ছে না। আরেকজন বললেন, ৩-৪ দিন খাবার পাইনি, কাল রাত্রে একটা জায়গায় খাবার দিচ্ছিল, ভাত নেই।
নিজেরাই প্রায় আধপেটা খেয়ে আছেন। গরু-ছাগলগুলোর দশা আরও খারাপ। তাই পোষ্যের গলার রশি হাতে দলে দলে গ্রাম ছাড়ছেন ওঁরা। এক গ্রামবাসী বললেন, আত্মীয়দের কাছে চলে যাচ্ছি বাড়ি ছেড়ে, ঘর দোর ভেসে গেছে।
প্রকৃতির রুদ্ররূপ থেকে রেহাই পায়নি কেউ। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের পর গ্রামে পানীয় জল ও খাবারের ভয়ঙ্কর আকাল দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রায় খালি হয়ে গেছে -- গোসাবা ব্লকের রাঙাবেলিয়া, পাখিরালয়, আরামপুর, রানিপুর, বাকবাগান, দয়াপুরের মতো এক একটা গ্রাম।
গোসাবা ঘাট থেকে নৌকায় চেপে গদখালি যাচ্ছেন। তারপর সেখান থেকে কেউ চলে যাচ্ছেন বাসন্তী, কেউ ক্যানিং, তো কেউ কলকাতা। গোসাবা পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি কৈলাস বিশ্বাস বললেন, চারদিকে নোনা জল, প্রচুর মানুষ ত্রাণ শিবির কিন্তু গোসাবার ৮০ শতাংশ মানুষ অসহায় অবস্থায় পড়েছেন, তাই তাঁরা চলে যাচ্ছেন। আমরা চেষ্টা করছি তাদের সাহায্য করতে।
ঘূর্ণিঝড় চলে গেছে। রেখে গেছে দগদগে ক্ষত! সে ক্ষত ছড়িয়ে পড়ছে প্রত্যেকের মনে। আবার কবে নিজের ঘরে ফিরবেন? আবার কবে গ্রামের রাস্তায় খেলে বেড়াবে শিশুদের দল? ঘুরপাক খাচ্ছে প্রশ্নগুলো....