জয়দীপ হালদার, সুন্দরবন: ইয়াস তাণ্ডবের পর তিনদিন কেটে গেলেও এখনও জলমগ্ন সুন্দরবনের মৌসুনী দ্বীপ। ভেঙেছে ঘর। ভেসে গেছে চাষের জমি। সহায় সম্বল হারিয়ে জীবনে ফেরার লড়াই চালাচ্ছেন বিচ্ছিন্ন ভূখণ্ডের বাসিন্দারা। খুব শিগগিরই মৌসুনী দ্বীপে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।


সুন্দরবন। এখানে মানুষ বাঁচে জলে। আবার এখানেই মানুষ ভাসে জলে।বাঁধ ছাপিয়ে জলস্রোত ঢুকেই চলেছে গ্রামে। যেদিকেই তাকানো যায় চারদিকে জল। ভেঙে পড়েছে গাছ। ভেঙে পড়েছে মাটির বাড়ি। ইয়াস তাণ্ডবের পর তিনদিন কেটে গেলেও এখনও জলমগ্ন সুন্দরবনের মৌসুনী দ্বীপের বিস্তীর্ণ এলাকা। বঙ্গোপসাগর আর চিনার নদীর জলরাশি দিয়ে ঘেরা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন ভূখণ্ডে এখন সহায়-সম্বল বাঁচানোর জোর লড়াই।


মৌসুনী দ্বীপের বাসিন্দা দেবাশিস মণ্ডল বলেন, আমরা কিছুই বের করতে পারিনি। চোখের সামনে গরু ভেসে গেল। তাদের বাঁচাব কী। আমরা নিজেদেরই বাঁচাতে পারছিলাম না। আরেক বাসিন্দার কথায়, এখানে খুব সমস্যা। আমরা খুব কষ্টে রয়েছি। এখানে প্রশাসনের এখনও কেউ আসেনি।


নদী আর সমুদ্র, দুইয়ের জলই বাঁধ টপকে উঠে এসেছে মৌসুনী দ্বীপে। ডুবে গিয়েছে বসতবাটি, ভেসে গিয়েছে চাষের জমি। কোথাও খোলা আকাশের নিচে পড়ে রয়েছে অবিন্যস্ত আটপৌরে সংসার। তার মধ্যেই প্রকট হয়েছে পানীয় জলের সমস্যা। এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, আমার বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। কিছুই বাঁচাতে পারিনি। অন্য একজনের বাড়িতে আছি। একটি মাত্র কল। তার উপর গোটা গ্রামের মানুষের নির্ভর।


জমা জলে ভাসছে মরা মাছ। তা থেকে এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। সব মিলিয়ে এক দুর্বিষহ পরিস্থিতি। মৌসুনী দ্বীপে খুব শিগগিরই ত্রাণ পৌঁছনোর আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। নামখানার বিডিও বলেন, মৌসুনী দ্বীপে কিছু কিছু ত্রাণ সামগ্রী পাঠাচ্ছি। এখনও জলমগ্ন রয়েছে বেশ কিছু এলাকা। প্রয়োজনীয় সমস্ত জিনিস খুব শিগগরই পাঠাব। মৌসুনী দ্বীপে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে এখন চলছে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার  লড়াই।