দার্জিলিং ও শিলিগুড়ি: মোর্চার অনির্দিষ্টকালের বন্‍‍ধে পাহাড়ে অব্যাহত অচলাবস্থা। দার্জিলিং জুড়ে মোর্চার মিছিল। পাল্টা গোর্খ্যাল্যান্ড বিরোধী মিছিল শিলিগুড়িতে।
১৭ তারিখের হিংসাত্মক ঘটনার আটদিনের মাথায় ২৫ তারিখ অর্থাৎ রবিবার সিংমারির দফতর খুলল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। রবিবার সকাল ১১টা নাগাদ চকবাজার থেকে মিছিল বের করে যুব ও নারী মোর্চা। পৃথক গোর্খাল্যান্ড ও বাহিনী প্রত্যাহারের দাবিতে ওঠে স্লোগান। পুরো দার্জিলিং শহরের বিভিন্ন জায়গা পরিক্রমা করে মোর্চার মিছিল। মিছিল শেষে সিংমারি দলীয় কার্যালয়ের সামনে সভা করে মোর্চা নেতৃত্ব।
আন্দোলন আরও জোরদার করতে মরিয়া মোর্চা। মঙ্গলবার দার্জিলিং স্টেশন থেকে চকবাজার পর্যন্ত টিউবলাইট নিয়ে মিছিলের ডাক দিয়েছে তারা। যুব মোর্চার দার্জিলিং টাউন প্রেসিডেন্ট তিলক ছেত্রী বলেন, আমরা দেশের জন্য লড়তেও পারি। রক্তও ঝড়াতে পারি। নিজেদের গায়ে টিউবলাইট ভাঙা হবে।
সকালে মিছিলে যখন সোচ্চার মোর্চা, বিকেলে তখন গির্জায় প্রার্থনা পাহাড়বাসীর। এদিন দার্জিলিঙের লরেটো কনভেন্ট স্কুলের গির্জায় শান্তির জন্য প্রার্থনা করা হয়। বিশপ স্টিভেন লেপচা বলেন, অচলাবস্থা দূর না হওয়া পর্যন্ত রোজ চার্চে চার্চে প্রার্থনা হবে।
এরই মধ্যে সোমবার ইদ উপলক্ষে পাহাড়ে বন্‍ধ আংশিক শিথিল করেছে মোর্চা। দলের মুখপাত্র নর্বুজি লামা বলেন, ইদের যজন্য কাল পাহাড়ে বনধ শিথিল। গাড়িতে করে মসজিদ, আত্মীয়দের কাছে যেতে ছাড়। দোকানপাটবন্ধ থাকবে। মিছিল হবে না। অশান্তির আবহেই ইদ উপলক্ষে সেজে উঠছে দার্জিলিঙের বিভিন্ন মসজিদ।
এদিকে, গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে পাহাড়ে যখন মিছিল করছে মোর্চা, তখন গোর্খাল্যান্ডের বিরোধে মিছিল শিলিগুড়িতে! রবিবার শিলিগুড়ির বাঘাযতীন পার্ক থেকে মিছিল বের করে সাধারণ মানুষ। গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে হওয়া মিছিলে যেমন পাহাড়ের রাজনৈতিক দলের পতাকা দেখা যায়। সমতলের মিছিলে একেবারে উল্টো ছবি। নেই কোনও দলের পতাকা। মিছিলজুড়ে শুধুই জাতীয় পতাকা। সঙ্গে গোর্খাল্যান্ড বিরোধী ব্যানার-পোস্টার, গুরুং বিরোধী স্লোগান! মিছিল ঘিরে এদিন সমতলে ব্যাপক উত্তেজনাও ছড়ায়।
ইতিমধ্যে গোর্খাল্যান্ডের সমর্থনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে লেখা সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পবন চামলিংয়ের চিঠি ঘিরে চাপানউতোর বেড়েছে। শনিবার সিকিম সরকারের তরফে নোটিস দিয়ে, শিলিগুড়িতে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সিকিম ন্যাশনালাইজড ট্রান্সপোর্ট-এর বাসস্ট্যান্ড। এরপরই এদিনে শিলিগুড়ির এয়ারভিউ মোড়ে সিকিমের নম্বর প্লেট লাগানো পর্যটকবোঝাই গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়।
বাদ যায়নি সিকিম থেকে আসা পশ্চিমবঙ্গের নম্বর প্লেট লাগানো দু’টি গাড়িও! পাহাড়ে পুলিশের গাড়েতে আগুন হোক কিংবা সমতলে বাসে-গাড়িতে ভাঙচুর-- এ ধরণের ঘটনা পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করতে পারে বলেই আশঙ্কা! রাজ্য প্রশাসন যখন লাগাতার শান্তির পক্ষে সওয়াল করছে, তখন এ ধরণের আচরণ সেই শান্তিপক্রিয়াকে বিঘ্নিত করতে পারে বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের।