পূর্ব মেদিনীপুর: হলদি নদীতে ট্রলারডুবির ঘটনায় আরও ২ মৎস্যজীবীর মৃতদেহ উদ্ধার হল। এনিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ৩। এখনও একজন নিখোঁজ।
আজ সকালে স্থানীয় মৎস্যজীবীরা দুর্ঘটনাস্থলের থেকে ৪-৫ কিলোমিটার দূরে কাটাখালি এলাকায় নদী থেকে ২ জনের দেহ উদ্ধার করেন।
নিখোঁজ মৎস্যজীবীর সন্ধানে পুলিশের পাশাপাশি তল্লাশি চালাচ্ছে উপকূলরক্ষী বাহিনী ও এনডিআরএফ। শনিবার হলদি নদীতে ট্রলারডুবির ঘটনায় ১৪ জন মৎস্যজীবীর মধ্যে ১০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার নন্দীগ্রামের কেন্দামারি জলপাই গ্রাম থেকে ১৪ জন মৎস্যজীবী ট্রলারে চড়ে সমুদ্রে মাছ ধরতে রওনা দেন। পাড়ের থেকে কিছুটা গিয়েই রাত ১১টা নাগাদ জোয়ারের ঢেউয়ের ধাক্কায় হলদি নদীতে ডুবে যায় ট্রলার।
অশান্ত নদীতে পুলিশ প্রশাসনের সতর্কবার্তা উপেক্ষা করে ট্রলার নিয়ে বেরনোই কাল হল।
স্থানীয় সূত্রে খবর, রাত ১১টা নাগাদ নন্দীগ্রামের কেন্দামারি জলপাই থেকে মা করুণাময়ী নামে একটি ট্রলারে হলদি নদীতে মাছ ধরতে বেরোন ১৪ জন মত্স্যজীবী।
পাড় থেকে কিছুটা এগিয়ে তাঁরা নোঙর করে রান্নাবান্না করছিলেন। ট্রলারে মজুত ছিল কয়েকশো লিটার ডিজেলভর্তি বড় বড় ব্যারেল। আচমকাই জোয়ারের বড় ঢেউ ধাক্কা দিলে কাত হয়ে যায় ট্রলার। ডিজেলভর্তি ব্যারেলগুলি একদিকে চলে যায়। এতেই একদিনের ওজন বেড়ে যাওয়ায় ট্রলার উল্টে যায়।
মত্স্যজীবীদের অনেকেই প্রাণ বাঁচাতে জলে ঝাঁপ দেন। পুলিশ সূত্রে খবর, ৯ জন সাঁতরে পাড়ে ওঠেন। ঘণ্টা পাঁচেক পর ট্রলারের নীচ থেকে ২ জনকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাঁদের মধ্যে ট্রলার চালক প্রদীপ মান্নার মৃত্যু হয়। আর একজন নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি।
নিখোঁজ ছিলেন তিনজন। ভোররাত থেকে শুরু হয় তল্লাশি। ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ, হলদিয়ার এসডিপিও, নন্দীগ্রামের বিডিও সহ প্রশাসনিক আধিকারিকরা।
উপকুলরক্ষী বাহিনী হোভারক্রাফট নিয়ে তল্লাশি শুরু করে। উপকূলরক্ষীর বাহিনীর হেলিকপ্টারও অভিযানে অংশ নেয়। স্পিড বোট নিয়ে তল্লাশি চালায় রিভার ট্রাফিক পুলিশ। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরাও তল্লাশি চালান। ঘটনার প্রায় ৩০-ঘণ্টা পর আজ নিখোঁজ তিনজনের মধ্যে ২ জনের দেহ উদ্ধার হল।
পুলিশ প্রশাসনের তরফে জোয়ারের জন্য এখন নদীতে মাছ ধরতে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। সেই সতর্কবার্তা উপেক্ষা করে বেরিয়েই দুর্ঘটনা, এমনটাই অভিযোগ।