গ্রেফতার জঙ্গিদের বক্তব্য অনুয়ায়ী, এই সন্ত্রাসের ছক গিয়ে শেষ হয়েছে সেই পাকিস্তানেই। কিন্তু তাদের দেওয়া তথ্য রীতিমত আশঙ্কার উদ্রেক করে। ধৃত জঙ্গিরা জানিয়েছে, পাকিস্তান থেকে উপজাতি সম্প্রদায়ের বন্দুক নির্মাতারা এসে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী জেলা মালদহে ঘাঁটি গাড়ে। সেখানেই তাদের প্রশিক্ষণে মুঙ্গেরের বন্দুক নির্মাতাদের হাতে তৈরি হয় এ কে ২২ অ্যাসল্ট রাইফেল। তারপর তা চোরাচালান করা হয় সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে। এনআইএ গোয়েন্দারা মনে করছেন, পাকিস্তানের ওই বন্দুক নির্মাতারা পেশোয়ার ও কোহাট প্রদেশের মধ্যে কোনও গ্রামে বসবাসকারী, দারা আদম খেল সম্প্রদায়ের লোকজন। আধুনিক অস্ত্রের নকল প্রস্তুত করে তারা তালিবানকে নিয়মিত সাহায্য করে থাকে।
ওই বন্দুক নির্মাতারা যে ভাষায় কথা বলছিল বলে ধৃত জঙ্গিরা জানিয়েছে, তা পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনওয়ালায় সংশ্লিষ্ট গ্রামের মানুষের ভাষা বলে এনআইএ জানিয়েছে। বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই অভিযোগ করেছে, হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্রশস্ত্র সীমান্তের ওপার থেকে এসেছিল। বিহারের মুঙ্গেরের নাম করেছে তারা। বিহার পুলিশ এ ব্যাপারে তদন্ত করছে।
এসটিএফ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, রাজ্য পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগের পর বিহার পুলিশও জানিয়েছে, মালদহ সহ এ রাজ্যের আরও কয়েকটি জায়গায় অস্ত্র প্রস্তুতকারীরা তাদের কাজকর্ম চালাচ্ছিল।
এনআইএ মনে করছে, কাফে হামলার মাসখানেক আগে সংশ্লিষ্ট জঙ্গিদের হাতে একাধিক এ কে ২২ রাইফেল ও পিস্তল পৌঁছে যায়। কিন্তু অধিক পরিচিত এ কে ৪৭-এর বদলে এ কে ২২ রাইফেলের ব্যবহার নিয়ে অধিক চিন্তিত তাঁরা। রোমানিয়ায় তৈরি এই সেমি অটোমেটিক রাইফেল এ কে ২২ ব্যবহার করা সহজ। তাই সেগুলিই ব্যবহার করে ঢাকা জঙ্গিরা। কিন্তু সত্যিই যদি পাকিস্তানের দারা আদম খেল থেকে বন্দুক নির্মাতারা এসে মালদহে বন্দুক নির্মাণের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে, তবে গোয়েন্দাদের উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এই উপজাতি সম্প্রদায় যে কোনও ধরনের অস্ত্রের নিখুঁত কপি করতে পারে। মাত্র ১০দিনের মধ্যে অত্যাধুনিক রাইফেলের নকল করতে পারে তারা।