মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান: বৃহস্পতিতে বিশ্বকর্মা পুজো, দুর্গাপুজোরও বাকি হাতে গোণা ক’দিন।
ঢাকের বোল আছে...তাতে হৃদয়ের ডাক নেই!

করোনার ধাক্কায় এখনও অসহায় পশ্চিম বর্ধমানের লাউদোহার ঢাকি পরিবারগুলি।

বিগত বছরগুলোয় রথের সময় থেকেই বায়না আসত। কিন্তু, মহামারী পরিস্থিতিতে এবার সব বন্ধ।

পশ্চিম বর্ধমানের লাউদোহায় গৌরবাজার। সবাই ঢাকি পাড়া বলেই চেনে। গ্রামে প্রায় ২০০ ঢাকির বাস। এখানে এখন অখণ্ড অবসর।

সেই ফাল্গুন মাস থেকে ডাক নেই। বিশ্বকর্মা পুজো থেকে হয়তো হাল ফিরবে বলে ভেবেছিলেন ঢাকিরা। কিন্তু ভাদ্রের শেষ সপ্তাহেও বায়না পাননি গ্রামের বেশিরভাগ ঢাকিই। ।

ঢাকি বেনু বাদ্যকর বলেছেন, দুর্গাপুজোর অপেক্ষায় থাকি সারা বছর, কারণ এই সময়ে আমাদের চাহিদা থাকে বেশি । উপার্জনও হয় ভালো, কিন্তু এই বছর অনেক শিল্পীই এখনও পর্যন্ত ডাক পাইনি । স্বাস্থ্যবিধি মেনে দুর্গাপুজো হলে এবছর ডাক পাওয়ার আশাও কম।

লাউদোহার উত্তরপাড়া, দক্ষিণপাড়া ও বাদ্যকর পাড়ায় ঢাকিদের ব্যস্ততা নেই। অন্য বছর এই সময়, নতুন করে ঢাক বাঁধার হিড়িক পড়ে। এবার এখনও ধুলোই ঝাড়া হয়নি। সারা বছর সংসার চলবে কীভাবে, বুঝেই উঠতে পারছেন না তাঁরা।
ঢাকিপাড়ার অনেকেই বাপ-ঠাকুর্দার হাত ধরে এই পেশায়। অন্য কোনও কাজ করবেন সেই উপায়ও নেই। করোনার ধাক্কায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ঢাকিদের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।

পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ তথা তৃণমূল নেতা সুজিত মুখোপাধ্যায় বলেছেন, গৌড়বাজার গ্রামের দুশোটি শিল্পী পরিবারের মধ্যে ৬০টি পরিবার রাজ্যের তরফে ভাতা পায়, অন্য পরিবারগুলি ও যাতে এই সুবিধা পায় সেই বিষয়ে বিধায়ককে জানিয়েছি, প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

নমো নমো করে হলেও পুজোর আয়োজন শুরু হয়েছে। শেষ মুহূর্তে হয়তো মা দুর্গার কৃপাদৃষ্টি তাঁদের উপর পড়বে। এই আশা নিয়ে বেঁচে ঢাকিরা।