রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: গিলান্ডির ভাঙনে রাতের ঘুম উড়েছে ধূপগুড়ি ব্লকের কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের। ইতিমধ্যেই নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে বেশ কয়েক বিঘা চাষের জমি। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও আজ পর্যন্ত বাঁধ তৈরি করেনি প্রশাসন। সেচ দফতর জানিয়েছে, কোভিডের জন্যই কাজ আটকে রয়েছে।
পাড় ভাঙছে গিলান্ডি নদীর। তলিয়ে যাচ্ছে চাষের জমি। আতঙ্কিত জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি ব্লকের শালবাড়ি, বাইশচালা গ্রামের বাসিন্দারা। বসত বাড়িটাও তলিয়ে যাবে না তো? এই আশঙ্কাই এখন কুরে কুরে খাচ্ছে গ্রামবাসীদের মনে।
ধূপগুড়ি বাইশচালার এক বাসিন্দা বাপ্পা রায় জানিয়েছেন, 'খুবই আতঙ্কে আছি, এই পরিমাণে ভাঙ্গন চলতে থাকলে পুরো গ্রামটাই একদিন ডুবে যাবে। ৬০০ পরিবার আছে এই অঞ্চলে। এখন পর্যন্ত কেউ আসেনি বা কোনও ব্যবস্থাও নেয়নি। আমরা চাই বাঁধ দিয়ে নদী ভাঙ্গনটাকে আটকানো হোক।'
কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতেই গিলান্ডির পাড়ের এই হাল। গ্রামবাসীদের দাবি, ইতিমধ্যে নদী গর্ভে তলিয়ে গিয়েছে ২০ থেকে ২৫ বিঘা চাষের জমি। এখন বাড়ির অনেকটাই কাছে চলে এসেছে নদী। ভুক্তভোগী গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বাঁধ তৈরির ভুরি ভুরি প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও, কাজের কাজ কিছু হয়নি।
ধূপগুড়ি বাইশচালার আরও এক বাসিন্দা প্রতিমা রায় জানাচ্ছেন, 'জায়গা জমি সবতো চলেই গিয়েছে। সরকার তো বাঁধের ব্যবস্থা করলই না, ভোটের সময় এসে বলে যায় বাঁধ হবে আর ভোট হয়ে গেলে তো কেউ ফিরেও তাকায় না। নদীর জন্য ভয়ে তো থাকি, রাতে নদীর পারেই দাঁড়িয়ে থাকি কখন ঘর চলে যায়।'
ভাঙন সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন জেলা পরিষদের স্থানীয় তৃণমূল সদস্য। এ জন্য সেচ দফতরের ঘাড়েই দায় চাপিয়েছেন তিনি। জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের তৃণমূল নেত্রী ও সদস্য মমতা সরকারের কথায় আমরা সেচ দফতরকে জানিয়েছি অনেক বার যোগাযোগ হয়েছে ওরা সাইড এসে দেখেও গিয়েছে, ২০১৯ সালে আমরা চিঠিও করেছি, যে সমস্থ জায়গার জমি ভেঙ্গে পরে যাচ্ছে সেগুলো দ্রুত মেরামত করে সেখানে বাঁধের প্রয়োজন সেটা করা হোক কিন্তু, প্রশাসনিকভাবে কোনও বার্তা পাচ্ছি না, জানি না কেন আমাদের অভিযোগ শুনছে না প্রশাসন।'
এ দিকে, সেচ দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, তিন মাস আগে কলকাতায় জলসম্পদ ভবনে বাঁধ তৈরির হিসেব পাঠানো হয়েছে। কোভিড পরিস্থিতির জন্য কাজ করা যায়নি। আশা করা হচ্ছে, দ্রুত কাজ শুরু করা যাবে।