কলকাতা: বাঙালিকে উদ্বাস্তু করার চেষ্টা হচ্ছে। আমরা তা হতে দেব না। যাদের জন্য উদ্বাস্তু হতে হয়েছে, তাদেরকেই ডেকে আনা হচ্ছে। জোকার ডায়মন্ড পার্কে চা-চক্রে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ফের তৃণমূলকে খোঁচা দিলীপ ঘোষের।
বলেন, উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দিতে চেয়েছিলাম, তৃণমূল বাধা দেয়। এখনও ওরাই বাংলাদেশ থেকে লোক এনে আপনাদের উদ্বাস্তু করে দিতে চাইছে।
তৃণমূলের জমানায় উর্দির সম্মান নষ্ট হয়েছে। বীরভূমই তার প্রমাণ। পুলিশের সম্মান আমরা ফিরিয়ে দেব। ২০১৬-য় পুলিশকে বলেছিলেন ফ্ল্যাট দেবেন, দিয়েছেন কি? পুলিশকে প্রতারিত করা হয়েছে। জোকার ডায়মন্ড পার্কে চা-চক্রে পুলিশ প্রসঙ্গে তৃণমূলকে আক্রমণ দিলীপ ঘোষের।
তিনি বলেন, আইএএস, আইপিএস ধর্না দিয়ে বসে আছে অনুব্রতর (মণ্ডল) সামনে। এ দৃশ্য ভারতের কেউ দেখেছে কোনও দিন। এই জন্য আইএএস আইপিএস হয়েছেন। ভদ্রলোকের ছেলে! এই অসম্মানের বদলা চাই। সমস্ত অফিসারদের চাকরবাকর বানিয়েছেন? সামান্য সম্মান পান না তাঁরা! তাহলে কী সেবা দেবেন আমাদেরকে?
দিলীপ ঘোষের দাবি, রাজ্য পুলিশের সম্মান আমরা ফেরত দেব। আমাদের কেস দিয়েছেন। কেন আমরা জানি। পুলিশ প্রশাসন নিরপেক্ষ না হলে সেই সমাজে কিছু হতে পারে না। আমরা আপনাদের সম্মান ফেরত দেব।
গতকাল রাজ্য সরকারি কর্মীদের ৩ শতাংশ ডিএ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণাকে আক্রমণ করে দিলীপ বলেন, কেন ডিএ বাকি। আমাদের চাপে ঘোষণা। তাও জানুয়ারিতে। বেঁচে থাকলে পাবেন। সব রাজ্য দেয়। এখানে সরকার কেন দিতে পারে না। পিএফের টাকাও জমা না দিয়ে ঝেড়ে খেয়ে নিচ্ছে সব।
উচ্চমাধ্যমিক, হাই মাদ্রাসা পড়ুয়াদের জন্য ট্যাব দেওয়ার কথা জানান মমতা। এদিন সেই নিয়েও কটাক্ষ করেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি। বলেন, আবার বলছেন কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ট্যাব দেবেন। যে সাইকেল দিয়েছেন সেটা চড়ে বাড়ি ফেরা যায় না। কাটমানি খেয়েছে ভাইয়েরা। ট্যাব চলবে তো? যে দশ বছরে কিছু করেনি, সে দু মাসে করবে?
বাইক মিছিল নিয়েও সোচ্চার হন দিলীপ। বলেন, আমার সঙ্গে ছেলেরা বাইকে যেত। কাল পুলিশ বলেছে বাইক মিছিল চলবে না। টিএমসি করতে পারবে। বাইক মিছিল করে দুয়ারে দুয়ারে সরকার। কোনও দিন দেখেছেন বিডিওকে?
দিলীপের দাবি, কলকাতায় বিজেপির সভায় এখন লোক বাড়ছে। বলেন, কলকাতায় বিজেপি সভা করছে। লোক ভিড় করছে। এটা দু মাস আগে কল্পনা করতে পারেনি কেউ। এখন এটাই বাস্তব। বলছেন, কলকাতায় নাকি বিজেপি নেই। ডিসেম্বরে দেখবেন কি হয়। যাদের টেনশন তাদের ঠিক শুরু হয়ে গিয়েছে। ডিসেম্বর মাসে আবার বেহালায় আসব। আর তৃণমূলের লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না।
শুভেন্দু নিয়েও এদিন মুখ খোলেন দিলীপ। বলেন, টিএমসি মুসল পর্ব শুরু হয়েছে। নিজেদের গৃহযুদ্ধ। যারা বুড়োরা লড়াই করতো না তারা মাঠে নেমেছে। বলছে বাবা যেও না। বিজেপিতে শুভেন্দু আসবেন কোথাও বলেছে বলে আমি শুনিনি। শুভেন্দুকে জোর করে ওরা বিজেপিতে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। তৃণমুলে কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছে না। এ ওর নাম বলে দিয়ে চমকাচ্ছে আর আমাদের লোকেরা মজা নিচ্ছে।
এপ্রসঙ্গে সৌগত রায়কেও কটাক্ষ করেন তিনি। বলেন, সৌগত রায়ের বয়স হলে যা হয়। শিক্ষক মানুষ, উনার একটা গরিমা আছে। সেটা বজায় রেখে কথা বলুন। কেন চ্যাংড়াদের মত কথা বলছেন। উনি রাজ্যপাল নিয়ে কথা বলছেন। এটা কি উনার শোভা পায়?
এদিন দিলীপের নিশানায় ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। নাম না করে আক্রমণ শানান বিজেপি রাজ্য সভাপতি। বলেন, খোকা আবু বলছেন আমি নাকি গুন্ডা। লজ্জা করে না, গুন্ডামি কে করছে। গতকাল থেকে এখানে বিজেপি কর্মীদের উপর ঝামেলা করা হচ্ছে। ঝান্ডা খুলে নেওয়া হয়েছে। ঝান্ডা পুড়ানো হয়েছে। তৃণমূল নেতারা বিজেপিকে আটকানোর শেষ চেষ্টা করছেন তবে এটা সম্ভব হবে না।