দীপক ঘোষ, ঋত্বিক মণ্ডল, সমিত সেনগুপ্ত, কলকাতা:  বঙ্গ বিজেপিতে নানাবিধ টানাপোড়েনের মধ্যেই কাল দিল্লিতে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন দিলীপ ঘোষ। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির সঙ্গে রাজ্য সভাপতির বৈঠক ঘিরে সাংগঠনিক রদবদলের জল্পনা তুঙ্গে। বেসুরোদের সামলাতে গেরুয়া শিবির কোনও ব্যবস্থা নেয় কিনা, সেদিকে তাকিয়ে রাজনৈতিকমহল।


বিধানসভা ভোটে হারের পর থেকেই বঙ্গ বিজেপির অন্দরে বেসুরোদের তালিকা ক্রমশ চওড়া হতে শুরু করেছে। এই তালিকায় রয়েছেন সৌমিত্র খাঁ, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সব্যসাচী দত্ত, চন্দ্র বসু ও জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নেতারা।


এই প্রেক্ষাপটে দিল্লিতে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার সঙ্গে বৈঠকে বসছেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেছেন, কাল বৈঠক আছে। নির্বাচনের পরেই তাঁর সঙ্গে বসব ভেবেছিলাম। বসা হয়নি। এবার উনি ডেকেছেন। যে সব বিষয়ে আলোচনা করার ছিল করে আসব।


হারের কারণ নিয়ে বিজেপির অন্দরে কাটাছেঁড়ার মধ্যেই নাড্ডার সঙ্গে দিলীপ ঘোষের বৈঠক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে! কারণ, একাধিক নেতা ইতিমধ্যেই বেসুরে গাইতে শুরু করেছেন। কয়েকদিন আগে রাজ্য যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁ শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন। দলের রাজ্য সভাপতিকেও নিশানা করেন। রাজ্যের বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন, ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে আসা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও। রাজ্য নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে সরব জয় বন্দ্যোপাধ্যায়, চন্দ্র বসুর মতো একদা বিজেপির তারকা প্রার্থীরাও।


এই পরিস্থিতিতে রবিবার সকাল ১১টায় মুখোমুখি বসবেন জেপি নাড্ডা ও দিলীপ ঘোষ। বিজেপি সূত্রে খবর, বৈঠকে দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়টি গুরুত্ব পেতে পারে।  


কারোর বিরুদ্ধে বিজেপি কোনও কড়া ব্যবস্থা নেয় কি না, সাংগঠনিক পদে কারোর ওপর কোনও কোপ পড়ে কি না, সেদিকেই নজর রাজনৈতিক মহলের। যদিও, বিজেপির এই বৈঠককে কটাক্ষ করতে দেরি করেনি তৃণমূল। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেছেন, আগে পরিযায়ীরা আসতো এখানে। এখন নব্য বিজেপি, পুরনো বিজেপির টানাপোড়েন চলছে। তালমিলের অভাব সামনে এসেছে।


সম্প্রতি মোদি মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণে রাজ্য থেকে দুই মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় ও দেবশ্রী চৌধুরী বাদ পড়েছেন।বিজেপি সূত্রে খবর, এই দু’জনকে সংগঠনের দায়িত্বে কীভাবে কাজে লাগানো যায়, তা নিয়েও কথা হতে পারে জেপি নাড্ডা ও দিলীপ ঘোষের।  আলোচনায় উঠতে পারে ভোট পরবর্তী অশান্তির অভিযোগে ঘরছাড়াদের পাশে দাঁড়ানোর প্রসঙ্গও।


হারের হতাশা কাটিয়ে দলকে চাঙ্গা করা ও জেলায় জেলায় দলকে আন্দোলনমুখী করার কৌশল নিয়েও সর্বভারতীয় ও রাজ্য সভাপতির মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা বলে গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর।