কমলকৃষ্ণ দে, জামালপুর: দামোদর তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করতে মাইকে প্রচার শুরু হল পূর্ব বর্ধমান জেলায়। এমনকি সন্ধে থেকেই দামোদরের উপর চলা খেয়া চলাচল বন্ধ করে দিলেন জামালপুর বিডিও। জামালপুরের ছয় জায়গায় সন্ধে থেকে খেয়া পারাপার বন্ধ করেছে প্রশাসন।


ডিভিসি ধাপে ধাপে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়ানো প্লাবনের আশঙ্কা থাকছে দামোদর তীরবর্তী এলাকায়। বাসিন্দাদের সচেতন করতে মাইকে প্রচার চালানো হচ্ছে রায়না, খণ্ডঘোষ, জামালপুর ও গলসি এলাকায়। প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে মাইকে প্রচার চালানো হচ্ছে। 


বিহার, ঝাড়খণ্ডসহ দামোদরের ক্যাচমেন্ট এরিয়ায় অতি ভারী বর্ষণের কারণে জলাধারগুলির ওপর চাপ বাড়ছে। ফলে জল ছাড়া অব্যাহত রেখেছে ডিভিসি। দুপুরে থেকে ১ লক্ষ ১৯ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হলেও তার পরিমাণ বেড়ে দেড় লক্ষ কিউসেক হতে পারে। 


সে কারণে দুর্বল এলাকায় বাঁধ ভেঙে জল ঢুকে পড়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। সেই উদ্বেগ থেকেই বাসিন্দাদের সতর্ক করতে মাইকে প্রচার শুরু হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। 


পরিস্থিতি প্রতিকূল হলে পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতির প্রতিনিধি, স্থানীয় প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে বাসিন্দাদের যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। 


পাশাপাশি তাঁদের নিরাপদ আশ্রয়ে উঠে যাওয়ার আবেদনও জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগাম সর্তকতা হিসেবে ব্লকগুলিতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ত্রিপল, শুকনো খাবার, পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।


গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন বর্ধমান শহরের বেশকিছু এলাকা। প্রশাসন সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই জেলার ৪ হাজার মানুষকে ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ লক্ষ ২ হাজার হেক্টর কৃষিজমি। 


জল বাড়ার সাথে সাথে সব জায়গাতেই অস্থায়ী বাঁশ ও কাঠের সেতু খুলে ফেলা হয়েছে। সেইসব এলাকায় ঝুঁকির ফেরি চলাচল চলছে। অনেক জায়গায় লাইফ জ্যাকেট ছাড়াই খেয়া-পারাপার চলছে। এর ফলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বাসিন্দারা।