কমলকৃষ্ণ দে ও রানা দাস, পূর্ব বর্ধমান: ধান উৎপাদনে রাজ্যে পূর্ব বর্ধমান সবার আগে। এখানে শষ্য উৎপাদন প্রতি বছরই বেশ ভাল হয়। কিন্তু প্রবল বৃষ্টির ফলে এবার ধানের চাষের জমি ক্ষতিগ্রস্ত। চাষীদেরও মাথায় হাত পড়েছে। কাছ থেকে দেখে মনে হবে সমুদ্র। যেদিকেই তাকানো যায় শুধু জল আর জল। কিন্তু এটা কোনও সমুদ্র নয়, এগুলি ধান জমি। জেলায় বাঁকা নদীর পাশ্ববর্তী এলাকার চাষ জমি গত চারদিন ধরে জলের তলায়। এমনই চিত্র দেখা গেল মেমারি ২ নং ব্লকে। পূর্ব বর্ধমান জেলায়  একটানা ভারি বৃষ্টি ও ডিভিসির ছাড়া জল বাঁকা নদী দিয়ে এসে জলমগ্ন করেছে ধান চাষের জমি। তারই  জেরে ক্ষতির মুখে চাষীরা। হেক্টরের পর হেক্টর আমন ধানের জমি জলের তলায়। সার্বিক ফলনে ব্যপক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা।


পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক প্রিয়াংকা সিংলা জানিয়েছেন, ‘এখনও পর্যন্ত বৃষ্টির জমা জলে গোটা জেলায় প্রায় ১০২ টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং প্রায় ৯০০ মৌজা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এর মধ্যে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১ লক্ষ ০২ হাজার হেক্টর কৃষি জমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। যার মধ্যে প্রায় ৩৫০ হেক্টর সব্জী চাষের জমিও রয়েছে। বাকি সব জমিই আমন ধানের।’ তিনি আরও জানিয়েছেন, জল নেমে যাবার পর ক্ষতির পরিমাণ বোঝা যাবে। চাষীরা জানিয়েছেন, একদিকে ডিভিসির ছাড়া জল ও টানা ৪ দিনের অতিবৃষ্টিতে বিঘের পর বিঘে ধান জমি জলের তলায়। চাষীদের আশঙ্কা জল মরে যাওয়ার পর সমস্ত ধান গাছই মরে যাবে কারন ধান চাষ করার কয়েকদিনের মধ্যেই রোয়া জমি জলের তলায় চলে গেছে।


ইতিমধ্যেই কৃষি আধিকারিক থেকে প্রশাসনিক আধিকারিকরা এলাকা পরিদর্শন করে গেছে। তাদের দাবী সরকার যদি তাঁদের পাশে না দাড়ায় তাহলে তাদের কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। বাঁকা নদীর জলে মন্তেশ্বরের বিস্তীর্ণ এলাকাও প্লাবিত। বিঘের পর বিঘে জমি জলের তলায়। জল ঢুকতে শুরু করেছে আমাটিয়া গাবড়ুপুর, ভান্ডারবাটি ও বসতপুর এ এলাকা । কিছু এলাকায় রাস্তার উপর জল উঠেছে। আজ এই সব জায়গা পরিদর্শন করেন কালনার মহকুমা শাসক সুরেশ কুমার জগৎ। তিনি বলেন বেশ কিছু মানুষকে অন্যত্র সরাতে হবে এছাড়াও কৃষি দফতরকে বলা হয়েছে যে কত চাষের  জমি ক্ষতি হয়েছে তার একটা হিসাব তৈরি করতে।