কলকাতা: বিলম্ব হলেও বোধোদয়। শিক্ষামহলের একটা বড় অংশ এত দিন যা দাবি করছিল, সেই পথেই হাঁটতে চলেছে সরকার। কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি পদে শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিকেই বসানোর উদ্যোগ শুরু হয়েছে। এখন, সাধারণ ভাবে, কলেজ পরিচালন সমিতিতে থাকেন একাধিক শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ জন প্রতিনিধি, ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক, ২ জন সরকারি প্রতিনিধি, স্থানীয় কাউন্সিলর অথবা পুরসভার চেয়ারম্যান কিংবা পঞ্চায়েত প্রধান।


পরিচালন সমিতির এই সব সদস্যরাই সভাপতি নির্বাচন করেন।

সেই সভাপতি বহিরাগতও হতে পারেন। তবে, তাঁর ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে বিধিতে স্পষ্ট কোনও নির্দেশ নেই।

শিক্ষামহলের একাংশের অভিযোগ, এই ফাঁক দিয়েই রাজ্যের সিংহভাগ কলেজের মাথায় নেতা-মন্ত্রীদের অনুপ্রবেশ। নবান্ন সূত্রে খবর, এই ছবিটাই বদলাতে চাইছে রাজ্য সরকার। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী বার বার বলেন, প্রাক্তন অধ্যক্ষদের এনে কলেজে সুযোগ দিতে, সভাপতি করতে। যাঁরা প্রকৃত শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত, সবসময় শিক্ষা নিয়েই থাকেন, তাঁদের মাথায় রাখলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে মঙ্গল হবে।

নবান্ন সূত্রে খবর, সামনের মাসে বিধানসভার অধিবেশন শুরু হলে, বিষয়টি নিয়ে বিধায়কদের সঙ্গে আলোচনা করবেন শিক্ষামন্ত্রী।

সরকারের এ হেন ভাবনাকে স্বাগত জানিয়েছে শিক্ষামহল। পাশাপাশি তাদের আরও প্রত্যাশা, সভাপতি পদে বসে শিক্ষাবিদরা যেন দলের দ্বারা প্রভাবিত না হন।

পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, শিক্ষায় দলতন্ত্র কায়েমের বীজ বপন হয়েছিল বাম আমলে। তৃণমূলের প্রথম ইনিংসেও এই ধারায় পরিবর্তন দেখা যায়নি। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে, বেড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধার সাহস দেখিয়েছে তৃণমূল সরকার। কীভাবে এই নীতির বাস্তবায়ন হয় এবং তাতে শিক্ষায় দলতন্ত্রমুক্তি ঘটে কি না, তা জানা যাবে আগামী দিনে।