কলকাতা: ভুয়ো চিকিৎসককাণ্ডে নয়া মোড়। সিআইডির নজরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের প্রাক্তন চিকিৎসক ও তাঁর ছেলে। স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তার ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ভবানী ভবন সূত্রে এমনটাই খবর।
সিআইডি মনে করছে, কাইজার আলম আর খুশিনাথ হালদার হিমশৈলের চূড়ামাত্র! সরকারি হাসপাতালে ভুয়ো চিকিৎসক নিয়োগের জাল অনেক দূর বিস্তৃত! সিআইডি সূত্রে দাবি, উঃবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের শীর্ষপদে চাকরি করা এক চিকিৎসক ও তাঁর ছেলেই চক্রের অন্যতম পাণ্ডা! তাঁরাই এমবিবিএস ও এমএসের জাল সার্টিফিকেট বিক্রি করতেন! ওই প্রভাবশালী সরকারি চিকিৎসক কিছুদিন আগেই অবসর নিয়েছেন। বাড়ি জলপাইগুড়ি মালবাজারে।
সিআইডি সূত্রে দাবি, এক ধৃত জানিয়েছেন, সদ্য অবসরপ্রাপ্ত ওই সরকারি চিকিৎসক ও তাঁর ছেলের কাছ থেকে ৪০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে জাল সার্টিফিকেট নিয়েছিলেন তিনি! তবে শুধু ডাক্তারির জাল শংসাপত্র বিক্রি করেই ক্ষান্ত হতেন না বাবা-ছেলে!
কাস্টমারদের প্রতিষ্ঠা দেওয়ারও দায়িত্ব নিতেন তাঁরা! তথাকথিত ‘ডাক্তার’-দের যাতে পসার জমে, সেজন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতেন!
বাবল অ্যানিমেশন আউট
সিআইডি সূত্রে দাবি, তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, সরকরি চিকিৎসক বাবা ও তাঁর ছেলের কাছ থেকে জাল সার্টিফিকেট কিনেছেন, এমন অনেকেই, কোচবিহার, অসম, আলিপুরদুয়ারের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করছেন!
সদ্য অবসর নেওয়া উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের ওই চিকিৎসক ও তাঁর ছেলেকে কড়া নজরদারিতে রেখেছে সিআইডি। শীঘ্রই তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ভবানী ভবন সূত্রে আরও দাবি, স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তাও গোয়েন্দাদের নজরে রয়েছেন! তিনি এখন স্বাস্থ্যভবনে ডেপুটি ডিরেক্টর পদে কর্মরত!
সিআইডি সূত্রে খবর, খুশিনাথ হালদারের নিয়োগের সময় জলপাইগুড়ি স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তা ছিলেন ওই ডেপুটি ডিরেক্টর! ধৃত দু’জনকে ১০ দিন হেফাজতে পেয়ে, বহু প্রশ্নেরই উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছে সিআইডি।
প্রসঙ্গত, ২৪ এপ্রিল সল্টলেকের ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানায় স্বাস্থ্য দফতরের তরফে একটি অভিযোগ দায়ের করে বলা হয়, রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে কাজ করছেন ভুয়ো ডাক্তাররা!
এই ঘটনায় তেসরা মে উত্তর দিনাজপুর থেকে কাইজার আলমকে গ্রেফতার করে সিআইডি। চোপড়ার দোলুয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও পাশের লক্ষ্মীপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডাক্তারি করতেন কাইজার আলম। পরদিন, আলিপুরদুয়ারের বীরপাড়া থেকে গ্রেফতার করা হয় খুশিনাথ হালদারকে। তিনি কর্মরত ছিলেন মধ্য রাঙালি প্রাথমিক ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে!
এই দু’জনেরই নিয়োগ হয়েছিল ন্যাশনাল রুরাল হেলথ মিশনের অধীনে। সেই নিয়োগ প্রক্রিয়াই এখন সিআইডির আতস-কাচের তলায়!