প্রকাশ সিনহা, কলকাতা: ভুয়ো ভ্যাকসিন প্রতারণাকাণ্ডে মিমি চক্রবর্তী, লাভলি মৈত্র ও শান্তনু সেনের বয়ান রেকর্ড করল কলকাতা পুলিশ। আজ সাক্ষী হিসেবে দুই তৃণমূল সাংসদ মিমি ও শান্তনু এবং তৃণমূল বিধায়ক লাভলির বয়ান রেকর্ড করা হয়।


সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে ভ্যাকসিন নিতে মেল করেছিল, এমনটাই দাবি করে ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জন দেব। এ বিষয়ে তথ্য পেতে সিরাম ইনস্টিটিউট জেনারেল ম্যানেজারকে সমন পাঠাল কলকাতা পুলিশ।


একাধিক ভুয়ো ই-মেল আইডি তৈরি করেছিল দেবাঞ্জন। এ বিষয়ে সার্চ ইঞ্জিন গুগলের কাছ থেকেও তথ্য পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা। তথ্য পেতে গুগলকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। 


যত দিন যাচ্ছে ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জনের একের পর এক প্রতারণার ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে। জানা গিয়েছে, নথি জাল করে ওয়েস্ট বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের নিয়োগপত্র খুড়তুতো দাদা কাঞ্চন দেবকে দিয়েছিল ধৃত দেবাঞ্জন। নথি জাল করা হয়েছিল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের। কসবা থানায় লিখিতভাবে এই অভিযোগ জানিয়েছেন কাঞ্চন।  পুলিশ সূত্রে খবর, লিখিত অভিযোগে কাঞ্চন জানিয়েছেন, ভুয়ো ইউপিএসসি পরীক্ষারও ব্যবস্থা করে দেবাঞ্জন।  সেই পরীক্ষায় কাঞ্চন বসেছিলেন। 


স্কুলে পড়ার সময় থেকেই মিথ্যে কথা ও প্রতারণায় সিদ্ধহস্ত ছিল ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জন।  এমনই অভিযোগ করেছেন তার স্কুলের বেস্ট ফ্রেন্ড। ওই বন্ধুর দাবি, দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই দেবাঞ্জন বন্ধুদের বলত, সে বিখ্যাত পরিচালকদের সহকারী। তথ্যচিত্রের জন্য ফ্রান্সের কান চলচ্চিত্র উত্‍সব থেকে পুরস্কারও পেয়েছে। সায়েন্স প্রজেক্ট করার জন্য পেয়েছে রাষ্ট্রপতির পুরস্কারও।


দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে গত বছর সল্টলেকের ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানায় চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণার মৌখিক অভিযোগ করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, দেবাঞ্জনের বাড়ির লোক সে সময় জানতে পারেন, সে ভুয়ো আইএএস।  এমনকী, দেবাঞ্জন ভুয়ো আইএএস সেজে বেশ কয়েকটি জায়গায় তল্লাশিও চালায়। গত বছর সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরের মধ্যে ৬৫ হাজার টাকায় অফিস ভাড়া নেয় সে। কয়েকদিন আগে দেবাঞ্জনকে নিয়ে তার মাদুরদহর বাড়িতে প্রায় আড়াই ঘণ্টা তল্লাশি চালান লালবাজারের গোয়েন্দারা। পুলিশ সূত্রে খবর, দেবাঞ্জনের বাড়ি থেকে বেশ কিছু নথি, স্ট্যাম্প বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।