সনৎ ঝা, মলয় চক্রবর্তী, দার্জিলিং: প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা না করেই করোনার ভুয়ো রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগ উঠল শিলিগুড়িতে। ঘটনায় ইতিমধ্যেই এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযোগ, পরীক্ষা না করেই একটি ল্যাবের নামাঙ্কিত পত্রে ভুয়ো রিপোর্ট দিতেন ওই যুবক। আর তাতেই ধরা পড়ে যান শেষ পর্যন্ত। এই চক্রের সঙ্গে আর কারা জড়িত, তার তদন্ত চালাচ্ছেন গোয়েন্দারা।
'বাড়ি থেকে সংগ্রহ করা হবে রক্ত-সহ করোনা পরীক্ষার নমুনা। বাড়িতেই পৌঁছে দেওয়া হবে মেডিক্যাল রিপোর্টের হার্ডকপি।' পরিচিত প্যাথলজিক্যাল ল্যাবের পরিচিত কর্মীর কাছে এমন আশ্বাস পেয়ে করোনাকালে নিশ্চিন্ত হয়েছিলেন শিলিগুড়ির সেবক রোড লাগোয়া এলাকার বাসিন্দা শিবা জৈন।
মাটিগাড়ার বাসিন্দা বিশাল দত্তকে বাড়িতে ডেকে, করোনা পরীক্ষার জন্য সোয়াব ও কিছু রক্ত পরীক্ষার জন্য নমুনা দেয় জৈন পরিবার। কিন্তু সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও রিপোর্ট না মেলায় শুরু হয় সন্দেহ। খোঁজ শুরু করে পরিবার।
শিবা জৈনের অভিযোগ, বিশাল রিপোর্ট দিয়ে যেত। এবার দেরি দেখে সন্দেহ হয়। ল্যাবে গিয়ে খোঁজ করে জানতে পারি ওখানে আর কাজই করে না বিশাল। পাশাপাশি পরিবারের আরও অভিযোগ, পরীক্ষা না করেই রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে তাঁদের।
সংশ্লিষ্ট প্যাথলজিক্যাল ল্যাব থেকে জৈন পরিবারকে জানিয়ে দেওয়া হয়, বিশাল সেখানে কাজই করেন না। সংস্থার এরিয়া ম্যানেজারের দাবি, বিশাল দত্তর বিরুদ্ধে আগেও অভিযোগ মিলেছে। জালিয়াতি ও দুর্নীতির কারণে গত ফেব্রুয়ারিতে কোম্পানি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে তাঁকে। জৈন পরিবার ও ল্যাব কর্তৃপক্ষ, দুতরফেই থানায় অভিযোগ দায়ের করে।
অভিযোগকারীর বাড়িতে গিয়ে ওৎ পাতে পানিট্যাঙ্কি ফাঁড়ির পুলিশ। ফোনে রিপোর্টের তাগাদা দিয়ে বিশালকে বাড়িতে ডাকে জৈন পরিবার। এরপর তাঁকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে দাবি, ধৃতের বাড়ি থেকে করোনা পরীক্ষার একাধিক নমুনা মিলেছে।
শিলিগুড়ি পুরসভার প্রশাসক গৌতম দেব জানিয়েছেন, মানুষের সচেতন হওয়া উচিত। এই সব পরীক্ষা শিলিগুড়ির বহু জায়গায় হয়। সেখানে গিয়ে করিয়ে আসা উচিত। ভুয়ো রিপোর্ট চক্রে আর কারা জড়িত, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।