আসানসোল, কৌশিক গাঁতাইত : আমার ছেলে নির্দোষ। বন্ধুরাই তাকে ফাঁসিয়েছে। বললেন হাওড়ার সাঁকরাইলে চুরির ঘটনায় ধৃত আসানসোলের মেধাবী ছাত্র সৌমাল্য চৌধুরির বাবা।


আসানসোল কোর্ট মোড়ের একটি বহুতল আবাসনের বাসিন্দা সৌমাল্যর বাবা। একাই ফ্ল্যাটে থাকেন তিনি। ২০২০ সালে প্রথমবার সৌমাল্য গ্রেফতার হয়ে জেল হেফাজতে থাকে কিছুদিন । সেই ঘটনায় অপমানিত বোধ করে তার মা আত্মঘাতী হন । মায়ের মৃত্যুর কিছুদিন পর জামিন পায় সৌমাল্য । হাওড়ার ঘটনা টিভিতে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন সৌমাল্যর বাবা । 


সৌমাল্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ব্যাংকের সমস্ত লেনদেন করত সৌমাল্য ও তার মা । ওর মা ওকে পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি করে দিয়েছিল । এমনকী তাঁর ব্যাংকের লেনদেনটাও করত সে । সম্প্রতি এলাকারই কিছু বন্ধু তাকে ভুল বুঝিয়ে তাদের দলে টেনে নেয় । তারপর তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে তাঁদের সমস্ত টাকা তুলে নিতে বাধ্য করায় বলে দাবি করেন সৌমাল্যর বাবা ।


বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজিতে এমএ সৌমাল্য। গত বছর মার্চে একটি চুরির ঘটনায় তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আসানসোলে ১৬টি এবং হাওড়া ও হুগলিতে ৬টি চুরির ঘটনায় পুলিশের খাতায় সৌমাল্যর নাম রয়েছে। ছেলের কুকীর্তির কথা জেনে আত্মঘাতী হন তাঁর স্কুল শিক্ষিকা মা। তার পর থেকে আসানসোলের ফ্ল্যাটে একাই থাকেন বাবা( পূর্ত দফতরের অবসরপ্রাপ্ত অফিসার)। রবিবার টিভিতে দেখেছেন ছেলের গ্রেফতার হওয়ার খবর।


অভিযোগ, ২০১৮ সাল থেকে পাকাপাকিভাবে চুরিকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে ইংরাজিতে এমএ সৌমাল্য। সঙ্গী প্রকাশকে নিয়ে ইদানীং পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় থাকত সে। গত ৯ জুন হাওড়ার সাঁকরাইল থানার অন্তর্গত দুইলা এলাকায় একটি ফ্ল্যাট থেকে প্রায় দশ ভরি সোনার গহনা চুরি করে চম্পট দেয় সে। স্কুটি করে পালানোর সময় ফ্ল্যাটের এক আবাসিক স্কুটির নম্বর লিখে নেয়। এই নম্বরের সূত্র ধরেই পাঁশকুড়া থেকে গ্রেফতার করা হয় সৌমাল্য চৌধুরী ও তার এক সাগরেদ প্রকাশ শাসমলকে। ১৯ জুন তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ।


যদিও সৌমাল্যর বাবার দাবি, বন্ধুরাই প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে ওকে দিয়ে নানা কাজ করায়। নিজেরা অপরাধ করে ওকে ফাঁসিয়ে দেয়। ১৯ লক্ষ টাকা তুলিয়ে নেয়। বাড়ির দলিলও নিয়ে নেয়। আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। আমার আর কিছু নেই।