অমিতাভ রথ, ঝাড়গ্রাম : স্বর্গ ছেড়ে যমরাজ এবার নেমে এলেন মর্তে! সঙ্গী আবার যমদূত, চিত্রগুপ্তও। সোমবার সকালে ঝাড়গ্রাম শহরের বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেল এমনই চিত্র। রাজ্যজুড়ে করোনার সংক্রমণ কমলেও বিধি নিষেধ মানার ব্যাপারে অল্প ঢিলেমি দিলেই যে সমূহ বিপদ, সেই বার্তা দিতেই অভিনব পদক্ষেপ করেছিল ঝাড়গ্রাম জেলা প্রশাসন। স্থানীয় লোকশিল্পীদের দিয়ে যে প্রচার চালানো হল।


গোটা দেশের সঙ্গে রাজ্যেও আপাতত কমেছে করোনার সংক্রমণ। কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা সামাল দেওয়া গেলেও চোখ রাঙাচ্ছে তৃতীয় ঢেউ। এইমসের অধিকর্তা রণদীপ গুলেরিয়া আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, ৬ থেকে ৮ সপ্তাহের মধ্যে দেশে আছড়ে পড়তে পারে করোনর তৃতীয় ঢেউ। ভ্যাকসিনেশনের জোর দেওয়ার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের কিছুটা গা ছাড়া মনোভাব আতঙ্কের রেশ বাড়াচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এমনিতেই রাজ্যে বিধি নিষেধ অনেক আগল দেওয়া হলেও তা পুরোপুরি শিথিল করা হয়নি। এই অবস্থায় যারা বাইরে বেরোচ্ছেন তারা যাতে কোভিডের জন্য প্রয়োজনীয় বিধিনিষেধ যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে মেনে চলেন সেই বার্তাই দিতে উদ্যোগ নিয়েছিল ঝাড়গ্রাম জেলা প্রশাসন।


করোনার বিরুদ্ধে এই বিশেষ সচেতনতা প্রচারে অংশ নিয়েছিলেন ঝাড়গ্রামের লোকশিল্পীরা। তাদের মধ্যেই কেউ যমদূত, কেউ চিত্রগুপ্ত ও কেউ যমরাজ সেজে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে প্রচার চালালেন। যমে-মানুষে টানাটানির মধ্যে যাতে না পড়তে হয় সেই জন্য মাস্ক পরা ও করোনা নিয়ে সচেতনতা বজায় রেখে বিধি নিষেধগুলো মেনে চলার বার্তাই সাধারণ পথচলতি মানুষকে দেওয়া হয় তাদের তরফে। ঝাড়গ্রাম শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরে ঘুরে তারা প্রচার চালান। স্বয়ং 'যমরাজ'কে এভাবে রাস্তায় নেমে প্রচার করতে দেখে সাধারণ পথচলতি মানুষের মধ্যে বেশ উন্মাদনা তৈরি হয়। রাস্তায় ধারে দাঁড়িয়ে উৎসাহিরা লোকশিল্পীদের মজার ছলে সচেতনতামূলক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা মন দিয়েই শোনেন।


পাশাপাশি এই অভিনব প্রচারের মাঝেই জনগণকে ফের একবার সতর্ক করে দেওয়া হয়, জ্বর-সর্দ-কাশির হলে সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে। হাসপাতালে যেতে। অযথা আতঙ্কিত না হয়ে নিয়ম অনুযায়ী চিকিৎসা করাতে। যমদূত, চিত্রগুপ্তকে সঙ্গে নিয়ে যমরাজের যে প্রচারকে স্বাগত জানিয়েছেন ঝাড়গ্রামের বাসিন্দারা।