ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, সমীরণ পাল, নিউ ব্যারাকপুর: ১৮ ঘণ্টা পার, এখনও জ্বলছে নিউ ব্যারাকপুরের কারখানা। হদিশ মিলছে না চার শ্রমিকের। আগুনের ভয়াবহতায় কারখানায় ঢোকানো গেল না দমকলের রোবটকে। দেওয়াল ভেঙে চলছে আগুন নেভানোর কাজ।
গভীর রাতে যেন জলন্ত আগ্নেয়গিরি! আগুনের গ্রাসে তিনতলা কারখানা ও গুদাম। শেষ রাত থেকে সন্ধে, লড়াই চালালেন দমকলকর্মীরা। নামানো হল রোবট। কিন্তু, তারপরেও কারখানার কয়েকজন কর্মীর মৃত্যুর আশঙ্কা।
বুধবার রাত তখন তিনটে। উত্তর চব্বিশ পরগনার নিউ ব্যারাকপুর থানা এলাকার তালবান্দা শিল্পতালুকের এই কারখানা ও গুদামে আগুন লাগে। স্থানীয় সূত্রে খবর, তখন কারখানার মধ্যে চারজন শ্রমিক ছিলেন। তিন তলা বাড়িটির একদিকের অংশে ছিল গেঞ্জির কারখানা। অন্য একটি অংশে তিনতলা জুড়ে ছিল গুদাম। স্থানীয় সূত্রে খবর, এই গুদামে ওষুধ ছাড়াও, স্যানিটাইজার, অ্যান্টিসেপ্টিক, ডায়পারের মতো দাহ্য বস্তু মজুত করা ছিল। আর তাতেই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বলে মনে করছে দমকল বিভাগ। আগুন লাগার কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকলের ইঞ্জিন। কিন্তু, ততক্ষণে আগুন ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে। কারখানার কয়েকটি লোহার গেট কাটা হয়। কিন্তু আগুনের হলকায়, ভিতরে ঢুকতে পারেননি দমকলকর্মীরা।
আগুন নেভাতে যেখানে দমকলকর্মীরা পৌঁছতে পারবেন না, সেখানে পৌঁছনোর জন্য দমকল বিভাগ রোবট কিনেছে। এখানে আগুন নেভাতে আনা হয় সেই রোবট। কিন্তু, আগুন এতটাই ভয়াবহ রূপ নেয় যে বিকল হওয়ার আশঙ্কায় রোবটটিকেও ভিতরে পাঠানোর সাহস পানননি দমকলকর্মীরা। বাইরে থেকেই সেটাকে কাজে লাগানো হয়।
রাত থেকেই আগুন নেভানোর চেষ্টা চালিয়ে যান দমকলকর্মীরা। কিন্তু, বেলা যত গড়াতে থাকে তিন তলা বাড়িটায় ততই ছড়িয়ে পড়তে থাকে আগুন। ধোঁয়া বের করে আগুন নেভানোর কাজে গতি আনতে শেষপর্যন্ত বুলডোজার দিয়ে কারখানার পিছনের দেওয়াল ভাঙা হয়। সেই বুলডোজারের উপরে দাঁড়িয়েই আগুন নেভাতে থাকেন দমকলকর্মীরা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আগুন নেভানো সম্ভব হয়নি।