সুমন ঘড়াই ও কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: এ যেন দুঃস্বপ্নের পুনরাবৃত্তি। বুধবার ইয়াসের তাণ্ডবে উপকূলবর্তী এলাকায় ভেঙেছে বহু বাঁধ। হু হু করে লোকালয়ে ঢুকেছে নদী কিংবা সমুদ্রের জল। গ্রামের পর গ্রাম চলে গেছে জলের তলায়। আজ তা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমফানের পর বাঁধ মেরামতি হলেও, এক বছরের মধ্যে তা কেন ভেসে গেল, কোথাও কোথাও বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হলেও, নির্দিষ্ট সময় পর কেন তা শেষ হল না, এমন একের পর এক কড়া প্রশ্ন ছুড়ে সেচ দফতরকে কার্যত কাঠগড়ায় তোলেন তিনি। দেন তদন্তের নির্দেশও।


আজ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জলের স্রোত ছিল ঠিক আছে। এভাবে সব বাঁধ ভেঙে গেল কেন? এনকোয়ারি হবে। আমফানের সময় তো তৈরি হল, সব কেন ভেসে গেল? মাটির বাঁধ তো ভাঙবেই। কয়েকটা সেভাবেই করা যেত। কবে থেকে ব্রিজ তৈরি করছে, শেষ আর হচ্ছে না। খালি হচ্ছে আর হবে, হচ্ছে আর হবে! এনকোয়ারি হবে। মণীশ, এনকোয়ারি কমিটি তৈরি করো। কোনও টাকা ছাড়বে না।’


আমফানের সময় সেচমন্ত্রী ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপিতে যোগদানের আগে গতবছর নভেম্বরে সেচমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। তার আগে ২০১১ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত রাজ্যের সেচমন্ত্রী ছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর তাঁকে বনমন্ত্রী করা হয়। ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির কথা বলতে গিয়ে বন দফতরের ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ফরেস্ট ডিপার্টমেন্ট কী করেছে? ৫ কোটি ম্যানগ্রোভ পুঁতবে বলেছিল, হয়নি।’


বিভিন্ন দফতরের কাজে মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভ নিয়ে শুরু হয়ে গেছে রাজনৈতিক তরজা। আমফানের মতো ইয়াসও বহু মানুষকে ভিটেহারা করেছে। কিন্তু এত মানুষের বিপদের জন্য কি দায়ী শুধুই প্রকৃতি? তা নিয়ে এখন চলছে চাপানউতোর।


এদিকে, পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডবে ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখতে কাল আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর সঙ্গে বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী।