কলকাতা: মহার্ঘ ভাতার বিজ্ঞপ্তি জারি রাজ্য সরকারের। পয়লা জানুয়ারি থেকে ৩% হারে মিলবে মহার্ঘ ভাতা। সম্প্রতি নবান্নে মহার্ঘ ভাতার ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কয়েকদিন আগে  রাজ্য সরকারি কর্মীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) ঘোষণা করেন  মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২১-এর জানুয়ারিতে ৩ শতাংশ ডিএ দেওয়া হবে বলে গত ৩ ডিসেম্বর জানান তিনি। তৃণমূলের নেতৃত্বাধীন কর্মচারী সংগঠন ফেডারেশনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই বৈঠকেই তিনি এই ডিএ ঘোষণা করেন।


মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, সরকারি কর্মীদের ৩ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা দিতে অতিরিক্ত খরচ হবে ২২০০ কোটি টাকা।

সম্প্রতি সরকারি কর্মীদের মহার্ঘভাতা বা ডিএ সংক্রান্ত মামলায় রাজ্য প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল বা স্যাটে বড়সড় ধাক্কা খায় রাজ্য সরকার। চলতি বছরে ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে ডিএ বাবদ যাবতীয় বকেয়া মিটিয়ে দিতে সরকারকে নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ফের হাইকোর্টে গেছে রাজ্য সরকার। তার শুনানির আগেই বড়সড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। যা নিয়ে কটাক্ষ করে বিরোধীরা।

বকেয়া ডিএ নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিনের।কেন্দ্রীয় হারে ডিএ বা মহার্ঘ ভাতার দাবি তুলে স্যাটে মামলা করেছিল কংগ্রেস সমর্থিত ‘কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্মেন্ট এমপ্লয়িজ়’ছাড়াও আরও দু’টি সরকারি কর্মীদের সংগঠন। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে স্যাট তার রায়ে বলে ডিএ দেওয়া বা না -দেওয়া রাজ্যের ইচ্ছার উপরে নির্ভর করে। স্যাটের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় সরকারি কর্মচারীদের একাধিক সংগঠন। ২০১৮ সালের ৩১ অগস্ট কলকাতা হাইকোর্ট তার রায়ে বলে ডিএ সরকারি কর্মীদের অধিকার। একই সঙ্গে মামলাটি পুনরায় স্যাটে ফিরিয়ে দিয়ে ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ডিএ কীভাবে ও কী হারে দেওয়া হবে, তা বিচার করে স্যাট তিন মাসের মধ্যে জানাবে।রাজ্য সরকার রায় পুনর্বিবেচনার জন্য হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে রিভিউ পিটিশন দাখিল করে। কিন্তু, হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের দায়ের করা রিভিউ পিটিশন খারিজ করে দেয়।

এরপর স্যাটও ফের জানিয়ে দেয়, চলতি বছরে ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে ডিএ বাবদ যাবতীয় বকেয়া মিটিয়ে দিতে হবে সরকারকে।

সেই রায়কে হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছে রাজ্য। আর এই প্রেক্ষাপটে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য বড় ঘোষণার মধ্যে বিশেষ কৌশল দেখতে পেযেছিলেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।

রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য ডিএ ঘোষণা পাশাপাশি মোদি সরকারকেও বিঁধেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছিলেন, “কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের কথা বলতে দেওয়া হয় না। শ্রমিকদের চুপ করিয়ে রাখা হচ্ছে। তাঁদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। যে কোনও সময় চাকরি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।”

সব মিলিয়ে বঙ্গে বিধানসভা ভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই নানা ইস্যুতে তুঙ্গে উঠছে রাজনীতি। বাদ পড়েনি কর্মীদের ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণাও।