দার্জিলিং ও কলকাতা: কাল থেকে পাহাড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য সরকারি দফতর বন্ধের ডাক দিয়েছে মোর্চা। আর কাল থেকেই গুরুংদের হাতে থাকা তিন পুরসভায় অডিট শুরু করছে রাজ্য প্রশাসন।
জিটিএ-র খরচ নিয়ে তত্ততালাশ চলছে। এরই মধ্যে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার ওপরে আরও চাপ বাড়াল তৃণমূল সরকার। এবার মোর্চা পরিচালিত পাহাড়ের তিন পুরসভাতেও স্পেশাল অডিটের সিদ্ধান্ত। বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, দার্জিলিং, কার্শিয়ং, কালিম্পং পুরসভায় সোমবার থেকে অডিটের কাজ শুরু করে দেবে অর্থ দফতরের বিশেষ দল।
মোর্চা অবশ্য প্রথম থেকে দাবি করে আসছে, প্রতিহিংসার রাজনীতি থেকেই অডিটের সিদ্ধান্ত। এক ধাপ এগিয়ে রবিবার, দুর্নীতি অভিযোগকেই পাল্টা হাতিয়ার করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন বিমল গুরুঙ্গ। অস্ত্র করেছেন সারদা, নারদ থেকে রোজভ্যালিকাণ্ড। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সভাপতি বলেন, ওয়েলকাম অডিটর। কিন্তু তৃণমূলের এমপি-এমএলের অডিট দরকার। সারদা-রোজভ্যালি থেকে টাকা খেয়েছে। নারদা থেকে টাকা নিয়েছে। তার অডিট আগে কর!
জিটিএ-র ‘চিফ এক্সিকিউটিভ’-এর আক্রমণের জবাব দিতে গিয়ে, তৃণমূল ‘স্পেশাল অডিটের প্রসঙ্গ সামনে এনেছে। শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, জিটিএ অডিট তো সরকারি নিয়মে হওয়ার কথা। অনেক বছর হয়নি। বাম সরকার করায়নি। অডিট তো করাতেই হবে। সেটাতে রাজনীতি টেনে আনার কী হল?
তৃণমূলের দাবি, এবার পাহাড়ের পুরভোটে যেভাবে ঘাসফুল ফুটেছে, তাতে ভয় পেয়ে গিয়েছে মোর্চা। গুরুঙ্গরা অবশ্য এই দাবি মানতে নারাজ। তাঁদের পাল্টা দাবি, পাহাড়ের বর্তমান পরিস্থিতিতে তৃণমূল ভাঙছে, শক্তিশালী হচ্ছে মোর্চা। গুরুঙ্গ বলেন, কয়েক হাজার টিএমসি থেকে জিজেএমে জয়েন করেছে। চ্যানেল টিভিতে ওরা দেখছে, আমাদের দমন করছে সরকার। তাই অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে সামিল হতে আসছে। গোর্খ্যাল্যান্ড মা। মাকে বাঁচাতে সবাই যোগ দিচ্ছে। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য গুরুঙের এই দাবিকে প্রকাশ্যে গুরুত্ব দিতে চায়নি। শোভন চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, ওরা কী বলে বিশ্বাসযোগ্য নয়।
পাহাড় ইস্যুতে শনিবার রাজনাথ সিংহর সঙ্গে দেখা করেছেন দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ। এর পরদিনই তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য শোনা গিয়েছে বিজেপির রাজ্য সভাপতির গলায়। দিলীপ ঘোষ বলেন, কেন্দ্র কথা বলার চেষ্টা করছে। মমতা বলছেন মানব না। কেন্দ্র জিটিএর একটা অংশ। শুধু টাকার বেলায় নেবে, আর সিদ্ধান্তের বেলায় নিজেরা নেবে এটা চলতে পারে না।
নবান্ন সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত মোর্চা পরিচালিত জিটিএকে ২ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৪০০ কোটি টাকা দিয়েছে রাজ্য। বাকি ৬০০ কোটি টাকা দিয়েছে কেন্দ্র। গত তিনটি অর্থবর্ষে এই টাকা কীভাবে খরচ হয়েছে, তা দেখবে অডিট টিম। তারপর দু’সপ্তাহের মধ্যে সরকারের কাছে জমা পড়বে অডিট রিপোর্ট। এবং জিটিএ-র এই অডিট রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনবে সরকার।
নবান্ন সূত্রে খবর, সম্প্রতি সিএজি একটি রিপোর্টে দাবি করেছে, কোনও প্রকল্পেরই ইউ সি বা ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট দেয়নি জিটিএ। এই অভিযোগও খতিয়ে দেখছে স্পেশাল অডিট টিম।
অর্থ দফতর সূত্রে খবর, জিটিএ-র হিসেবে গরমিল পেলে এফআইআর করা হবে। যাঁরা দায়ী তাঁদের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে আইনানুগ ব্যবস্থা। পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, এসবে বেজায় চাপে মোর্চা। পাল্টা চাপ সৃষ্টির কৌশল হিসেবে, তারা বেছে নিয়েছে, সেই পুরনো বনধের রাজনীতিকে।
সোমবার থেকে শুরু জিটিএ-অডিট, সারদা-রোজভ্যালি নিয়ে তৃণমূলের এমপি-এমএলের অডিটের পাল্টা দাবি গুরুঙ্গের
ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ
Updated at:
11 Jun 2017 08:14 PM (IST)
NEXT
PREV
রাজ্য (states) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেইলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে ।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -