আশাবুল হোসেন, দার্জিলিং: পূর্ণাঙ্গ ভোটার তালিকা তৈরির কাজ শেষ হলেই হবে GTA নির্বাচন। পরের ধাপে হবে পঞ্চায়েত নির্বাচন। পাহাড় সফরে গিয়ে ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আরও আগেই করতে হত, খোঁচা বিজেপির।
ভোটার তালিকার কাজ শেষ হলেই পাহাড়ে GTA নির্বাচন হবে। তারপর হবে পঞ্চায়েত নির্বাচনও। মঙ্গলবার কার্শিয়ঙে দার্জিলিং ও কালিম্পঙ জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে এমনই ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন কার্শিয়াঙে তিনি বলেন, “নতুন ভোটার তালিকা তৈরির কাজ চলছে। পূর্ণাঙ্গ ভোটার তালিকা তৈরির কাজ শেষ হলেই প্রথমে জিটিএ নির্বাচন, পরে পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে।’’
সম্প্রতি দার্জিলিং সফরে গিয়ে GTA-র বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি, অডিট না করানোর মতো অভিযোগে সরব হয়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। এই প্রেক্ষাপটে এদিন মুখ্যমন্ত্রী GTA নির্বাচনের কথা ঘোষণা করতেই, এই ইস্যুতে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি।
বেশ কয়েকদিন ধরেই উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য করার দাবিতে সরব হয়েছেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লা-সহ একাধিক নেতা। এই পরিস্থিতিতে এদিন পাহাড়ে এসে নাম না করে বিজেপির বিরুদ্ধে বিভাজনের রাজনীতি করার অভিযোগ তুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “ভোটের আগে একটি রাজনৈতিক দল আসে, বিভাজনের রাজনীতি করে আসন জিতে নেয়, কিন্তু সমস্যার সমাধান হয় না। এদের উদ্দেশ্য পাহাড়ের মানুষের মধ্যে বিভাজন তৈরি করা।’’
বিরোধীদের আক্রমণের পাশাপাশি পাহাড়ে দলের নেতাদেরও এদিন সতর্ক করে দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। তিনি বলেন, “পাহাড়ে যেসব পার্টি রয়েছে, তাদের সঙ্গে শান্তিপূরণ সহাবস্থন করতে হবে। ঝগড়া করা যাবে না। তোমাদের আমি বলি, তোমরাই আমাকে পরিকল্পনা দাও, যে কী করে একটি স্থায়ী সমাধান করা যায়। দার্জিলিং বাংলার মধ্যে থাকবে, আমি তোমাদের মদত করব। যাতে তোমাদের ছেলেমেয়েরাই নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে।’’
২০১২ সালে প্রথম জিটিএ নির্বাচন হয়। ওই নির্বাচন বয়কট করে জিএনএলএফ। মোর্চার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস ছড়ানোর অভিযোগে পরে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ায় সিপিএম। পৃথকভাবে লড়াই করে তৃণমূল। সর্বোচ্চ আসন পেয়ে জয়ী হয় গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। এরইমধ্যে ২০১৭ সালে পাহাড়ে আগুন জ্বলে, সেই সময় খোদ মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ে ছিলেন। তারপর পাহাড়ের সমীকরণ অনেকটাই বদলে গেছে। বর্তমানে মোর্চা কার্যত ভেঙে গিয়েছে। একদা একসঙ্গে পথচলা বিমল গুরুং, বিনয় তামাং ও অনীত থাপা - আজ আলাদা আলাদা পথে। উল্টোদিকে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে পাহাড়ে নতুন করে জমি তৈরি করতে চাইছে জিএনএলএফ। অন্যদিকে বিমল গুরুং আবার বিজেপির সঙ্গ ছেড়ে এখন তৃণমূলের দিকে ঝুঁকেছেন। আর এই পরিস্থিতিতে জিটিএ নির্বাচনের কথা ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।