মালদা: ব্যাঙ্ক প্রতারণাকাণ্ডে মালদায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ধৃত চিনা নাগরিক হান জুনওয়েকে ৬ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিল মালদা জেলা আদালত। ধৃত ওই  চিনা নাগরিক সাইবার বিশেষজ্ঞ। ২০২০-তে ৮ কোটি টাকা দিয়ে গুরুগ্রামে হোটেল কেনে হান জুনওয়ে। বেশ কিছু ব্যাঙ্কে প্রতারণার অভিযোগ আছে হানেদের বিরুদ্ধে। পুলিশ সূত্রে খবর, চিনা সামরিক বিভাগের কয়েকজনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে হানের।


ধৃত চিনা নাগরিকের ৭দিনের হেফাজত চেয়েছিল পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, কী কারণে ভারতে অনুপ্রবেশ, জানতে চলছে জেরা। ফেব্রুয়ারিতে আর্থিক প্রতারণার মামলায় উত্তরপ্রদেশে ১৮জন গ্রেফতার করা হয়। আর্থিক প্রতারণা মামলাতেই অভিযুক্ত ছিল হান জুনওয়ে। সূত্রের খবর, চিনা নাগরিককে হেফাজতে নিতে ট্রানজিট রিমান্ড চেয়ে লখনউ আদালতে আবেদন করতে পারে উত্তরপ্রদেশ এটিএস।


৩৬ বছরের হান জুনওয়ে। চিনের হেবেই প্রদেশের বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার ভোররাতে মালদায় ভারত-বাংলাদেশের সীমান্ত মিলিক সুলতানপুর থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে BSF। সম্প্রতি ব্যাঙ্ক জালিয়াতির অভিযোগে সান জিয়াং নামে একজনকে, লখনউ থেকে গ্রেফতার করেছিল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। এবার জালে ধরা পড়ল তার ব্যবসায়িক অংশীদার হান জুনওয়ে। ধৃতের চিনা যুবকের কাছ থেকে ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন ছাড়াও মিলেছে বাংলাদেশ ও ভারতে দুটি এবং চিনের ২টি সিমকার্ড। পাওয়া গেছে ডলার, বাংলাদেশি ও ভারতীয় নোট। মিলেছে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড সোয়াইপ করার ৫টি POS যন্ত্র সহ বেশকিছু জিনিস। পাওয়া গেছে তাঁর পাসপোর্টও।


শুক্রবার কালিয়াচক থানার পুলিশের হাতে ধৃতকে তুলে দেয় BSF। রাজ্য পুলিশের পাশাপাশি তাঁকে জেরা করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সন্ত্রাস দমন শাখার অফিসাররাও। BSF ও পুলিশ সূত্রে দাবি, ধৃতকে জেরা করে জানা গেছে, সে এর আগেও চারবার ভারতে এসেছিল। ২০১০ সালে হায়দরাবাদ, এবং ২০১৯ থেকে ৩ বার দিল্লি গিয়েছিল। ২০২০ সালে প্রায় 8 কোটি টাকা দিয়ে গুরুগ্রামে ‘স্ট্রার স্প্রিং’ নামে একটি হোটেলও কেনে সে। BSF-এর তরফে আরও দাবি করা হয়, জাল নথি ব্যবহার করে প্রায় ১৩০০ ভারতীয় সিম চিনে নিয়ে গেছিল ধৃত যুবক। শুধু তাই নয়, অন্তর্বাসের আড়ালে সিম নিয়ে যেত বলে জেরায় স্বীকার করেছে ধৃত যুবক। এই সিমগুলি অন্যের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করতে ব্যবহৃত করা হত।


বিএসএফ সূত্রে দাবি,দোসরা জুন ব্যবসায়িক ভিসায় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় পা রেখেছিল হান জুনওয়ে। সেখানে চিনা বন্ধুর সঙ্গেই থাকত সে। ৮ জুন, সে চাঁপাই নবাবগঞ্জে যায়। সেখানে একটি হোটেলে ওঠে।  চিন থেকে ভারতের ভিসা পাচ্ছিল না বলে, বাংলাদেশ হয়ে ভারতে ঢুকেছে। নদী পেরিয়ে সে এদেশে ঢুকে পড়েছিল বলে বিএসএফ সূত্রে দাবি।