মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: সুদ কারবারিদের দাপটে মৃত্যু হল এক কলেজ পড়ুয়ার। মঙ্গলবার কলেজ পড়ুয়া এক যুবককের মৃত্যু ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল এলাকায়। মৃতের নাম রোহন দাস। তাঁর বয়স ২০ বছর। সুদ কারবারিদের হেনস্থার শিকার হয়েই মৃত্যু হয়েছে রোহনের, এমনই অভিযোগ মৃতের পরিবার সহ এলাকাবাসীর। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।


মৃতের পরিবারের তরফে অভিযোগ, ওই যুবকের দাদা রাহুল দাস ব্যবসা সূত্রে লক্ষাধিক টাকা সুদ কারবারিদের কাছ থেকে নিয়েছিলেন। কিন্তু চড়া সুদের টাকা মেটাতে পারেননি। এরপরই সুদ কারবারিরা শাসাচ্ছিল তাঁদের। দুর্গাপুর স্টিল টাউনশিপের টেগর অ্যাভিনিউেয়র বাড়িতে মাঝে মাঝেই থাকতেন না রাহুল দাস। সেখানে কেবল রোহন ও তাঁর বাবা গৌতম দাস ও রোহানের মা থাকতেন। অভিযোগ, সুদ কারবারিরা দীর্ঘদিন ধরে ওই পরিবারের ওপর মানসিক ভাবে অত্যাচার করছিল। নানা হুমকিও দিত মস্তানদের বাড়িতে পাঠিয়ে।


শুধু তাতেই থেমে থাকেননি তারা। সেই সুদ কারবারিরা নাকি নানাভাবে হুমকি দিয়ে মারধরও করতে শুরু করে। আতঙ্কে ও আত্মসম্মানের কারণে কয়েকদিন আগে হঠাৎই নিখোঁজ হয়ে যায় রাহুল। এরপরই পরিবারের তরফে পুলিশে নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করা হয়। পরিবারের তরফে পুলিশকে যে অভিযোগ করা হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার গৌতমবাবু ও তাঁর স্ত্রী আত্মীয়ের বাড়ি গিয়েছিলেন। রোহন বাড়িতে একাই ছিল। এলাকাবাসীরা দেখেন যে ওই সুদ কারবারিরা কয়েকটি চার চাকা গাড়ি করে আসেন। এরপরই তারা চড়াও হয় রোহনের বাড়িতে। প্রায় ১০-১২ জন সমাজবিরোধী সহ সুদ কারবারি রোহনকে হেনস্থা ও মারধর করে।


ঘটনার আঁচ পেয়েই প্রতিবেশীরা প্রতিবাদ করতে এগিয়ে আসেন। এরপরই চাপে পড়ে এলাকা ছেড়ে চলে যায় সুদ কারবারিরা। রোহন  দুর্গাপুর থানায় গিয়ে বিষয়টি জানায়। এই ঘটনার পরেই দুপুর বেলায় এলাকাবাসীরা রোহনের গলায় দড়ির ফাঁস দেওয়া ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখতে পান। ঘরের মধ্যে ঝুলন্ত অবস্থায় রোহনকে দেখেই পুলিশের কাছে খবর জানানো হয়। একইসঙ্গে তাঁর বাবা- মাকেও খবর দেওয়া হয়। এরপরই পুলিশ এসে রোহনের ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য উদ্ধার করে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়।