কলকাতা: কলকাতা হাইকোর্টে বড়সড় ধাক্কা খেল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। মনোনয়ন দাখিলের সময়সীমা বাড়ানোর পর আবার সেই বিজ্ঞপ্তি বাতিলের যে সিদ্ধান্ত তারা নিয়েছিল, মঙ্গলবার তার ওপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে আদালত।
১০ ঘণ্টার মধ্যে এই ভোলবদল নিয়ে প্রবল সমালোচনার মুখে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার অমরেন্দ্র সিংহ। অনেকে বলছেন, এ তো অনেকটা এমন হল যে, রাজ্য নির্বাচন কমিশনার নিজেই দরজা খুললেন। কিন্তু, কেউ চৌকাঠ পেরনোর আগে আবার নিজেই সেই দরজা বন্ধ করে দিলেন!
সোমবার রাতে রাজ্য নির্বাচন কমিশন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, সুপ্রিম কোর্ট কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছে, বিভিন্ন দল ও প্রার্থীদের তোলা অভিযোগ খতিয়ে দেখতে এবং তারা যাতে পঞ্চায়েত ভোটের লড়াই থেকে বঞ্চিত না হয়, সেই মতো নির্দেশ দিতে। এই প্রেক্ষাপটে কমিশন নিজের ক্ষমতা প্রয়োগ করে মনোনয়ন দাখিলের সময়সীমা বাড়াচ্ছে। ১০ এপ্রিল সকাল এগারোটা থেকে দুপুর তিনটে পর্যন্ত মনোনয়ন দাখিল করা যাবে। রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানিয়ে ছিল, এসডিও ও বিডিও অফিসে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া যাবে। এ নিয়ে জেলাশাসকদের নির্দেশিকাও পাঠিয়েছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
এই নির্দেশে খুশি হয়ে বিরোধীরা যখন মনোনয়ন দাখিলের প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখনই আসে ধাক্কা! দশ ঘণ্টারও কম সময়ে নতুন নির্দেশিকা ফিরিয়ে নেয় রাজ্য নির্বাচন কমিশন। বিজ্ঞপ্তিতে তারা যে যুক্তি দেয়, তা নিয়েই বিতর্ক বাধে। কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে লেখা হয়েছে, এই নির্দেশের প্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিশেষ সচিবের একটি চিঠি এবং তৃণমূলের তরফে সহ সভাপতি কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সই করা একটি চিঠি আমরা পেয়েছি। ৯ এপ্রিল পাঠানো দু’টি চিঠিতেই কমিশনের নির্দেশে আইনি ত্রুটি চিহ্নিত করা হয়েছে।
প্রাপ্ত নথি খতিয়ে দেখে এবং ওপরে উল্লিখিত বিষয়গুলি বিবেচনা করে কমিশন সংশ্লিষ্ট নির্দেশ ফিরিয়ে নিচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে বিরোধীরা দাবি করে, তৃণমূল সরকারের অঙ্গুলিহেলনেই নতুন নির্দেশিকা ফিরিয়ে নিয়েছেন কমিশন। তৃণমূল অবশ্য এমনটা মানতে নারাজ। বিরোধীদের অভিযোগের পাল্টা তারাও আইনি যুক্তি খাড়া করছে।
আপাতত কমিশনের নতুন বিজ্ঞপ্তিতে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
যদিও, হাইকোর্টের অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশের পরেও অবশ্য মনোনয়নের দিন বাড়ানোর সম্ভাবনা ক্ষীণ। কমিশন সূত্রে খবর, নতুন করে আর বিজ্ঞপ্তি জারি হবে না। বুধবার মনোনয়নের স্ক্রুটিনি হবে।