কলকাতা: বিজেপির যুব সংগঠনের মিছিল ঘিরে শুক্রবার রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় কলকাতা। এই প্রেক্ষিতে আপাতত দু’দিন বিজেপির মিছিল স্থগিত রাখার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, ১৫ থেকে ২০ জানুয়ারি ফের ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার মিছিল চলবে। স্পেশাল অফিসারের সঙ্গে মিছিলের তদারকিতে থাকবেন একজন ম্যাজিস্ট্রেট।
শুক্রবার অবশ্য তৃণমূল-বিজেপি খণ্ডযুদ্ধের মধ্যে আদালত নিযুক্ত স্পেশাল অফিসার রবিশঙ্কর দত্তর গাড়িতেও ভাঙচুর করা হয়।
শুক্রবার হাইকোর্টে তিনি জানান, আমি সকাল সাড়ে ৯টায় জোড়াবাগানে যাই। সকাল সাড়ে এগারোটায় মিছিল শুরু হয়। আমার গাড়ি ছিল দু’টি পুলিশের গাড়ির মাঝখানে। হঠাৎই মহম্মদ আলি পার্কের কলাবাগানের কাছে ২০-২৫ জন মারমুখী যুবক তেড়ে আসে। গাড়ির কাচ ভেঙে দেয়। এরপরই মিছিল বন্ধ করে পুলিশের সাহায্য নিয়ে আমি বেরিয়ে আসি।
যদিও, রাজ্য আবার স্পেশাল অফিসারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এদিন বিচারপতিদের হাতে কলকাতা পুলিশের তোলা কয়েকটি ভিডিও ফুটেজ তুলে দেন অ্যাডভোকেট জেনারেল। বিচারপতিরা ৮ মিনিট ধরে ফুটেজ দেখার পর অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, আদালত নিযুক্ত স্পেশাল অফিসার মুকুল রায়ের সঙ্গে কথা বলেছেন। এটা কেন হবে?
আরেকটি ভিডিও ফুটেজ দেখিয়ে অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, আদালত নিযুক্ত স্পেশাল অফিসার যে গাড়িতে বসে আছেন, তার ড্যাশ বোর্ডে, বিজেপির লোগো রয়েছে। রাজ্য এই স্পেশাল এই অফিসারের উপর আস্থা হারিয়েছে।
যদিও, বিজেপির যুব সংগঠনের আইনজীবী দাবি করেন, এই লোগোর সঙ্গে স্পেশাল অফিসারের কোনও যোগ নেই। গাড়িটি সংগঠকদের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়, তাদেরই কারও পতাকা গাড়িতে থেকে গিয়েছিল।
র‍্যালি ঘিরে খণ্ডযুদ্ধ প্রসঙ্গে অবশ্য ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য এদিন ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা ঠিক সময়মতো রোড ম্যাপ দেননি। সেকারণেই সম্ভবত মিছিল নিয়ন্ত্রণ করতে সমস্যা হয়েছে। এরপর থেকে আপনারা আগের দিনই রোডম্যাপ দিয়ে দিন। আশা করি, তাহলে সমস্যা হবে না।
বিজেপির যুব সংগঠনের আইনজীবী তখন দাবি করেন, রাজ্য পুলিশকে দিয়ে এই কাজ হবে না। তারা মিছিল নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। এর জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী ডাকা হোক। যদিও, ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি একথা শুনে বলেন, আপনারা আগে রোডম্যাপ দিন। তারপরও পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যর্থ হলে আমরা বিকল্প পদ্ধতির কথা ভাবতে পারি।
এরপরই ১৫ তারিখ থেকে ফের মিছিল শুরুর নির্দেশ দেন বিচারপতিরা।