কলকাতা: আসানসোল ভ্যাকসিনকাণ্ডে রিপোর্ট তলব করল স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্যকর্মী না হয়েও কীভাবে ভ্যাকসিন দিলেন বিদায়ী মেয়র? সিএমওএইচের কাছে তথ্য জানতে চাইল স্বাস্থ্য দফতর। ভ্যাকসিন গ্রহীতারা কেমন আছেন, তাও নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
নেই কোনও প্রশিক্ষণ। অথচ নার্সের কাছ থেকে সিরিঞ্জ নিয়ে মহিলাকে ভ্যাকসিন দিলেন আসানসোল পুরসভার বিদায়ী ডেপুটি মেয়র। বিতর্কের মুখে তবস্সুম আরার সাফাই, তিনি শুধু সিরিঞ্জ নেন। বিদায়ী ডেপুটি মেয়রকে শোকজ করেছেন পুর প্রশাসক। একইসঙ্গে এক চিকিৎসক, দুই নার্সকে শোকজ করেছে পুরসভা। নজরে তবস্সুমের হাত থেকে ভ্যাকসিন নেওয়া মহিলা। তাঁকে দেখাশোনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এক চিকিৎসক।
ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ড নিয়ে যখন তোলপাড় রাজ্য, তখন শনিবার পশ্চিম বর্ধমানের কুলটিতে ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পে দেখা গেল চূড়ান্ত অসচেতনতার ছবি। ক্যাম্পে যিনি নার্সের ভূমিকা নিয়ে ভ্যাকসিন দিলেন, তিনি সাধারণ কেউ নন, খোদ আসানসোল পুরসভার বিদায়ী ডেপুটি মেয়র তবসসুম আরা। ক্যামেরায় স্পষ্ট ছবি ধরা পড়লেও বিদায়ী ডেপুটি মেয়রের দাবি, তিনি নাকি শুধু সিরিঞ্জ হাতে নিয়েছিলেন। আসানসোল পুরসভার তৃণমূল নেত্রী ও বিদায়ী ডেপুটি মেয়র তবস্সুম আরা বলেন, “আমি হাতে ধরেছিলাম অ্যাওয়ারনেসের জন্য, ছবিতে হাতে ধরেছিলাম, স্কুল টাইমে নার্সিং কোর্স করেছিলাম, সচেতন করতে এটা করি।’’
জনপ্রতিনিধির দায়িত্বজ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসক কুণাল সরকার বলেন, কিছু অবিবেচক থাকবে, এদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে, এদের জন্য সাধারণ মানুষের ভ্যাকসিনেশনের টার্গেটে যেন ক্ষতি হতে না পারে।
আসানসোলের বিদায়ী ডেপুটি মেয়রের কাণ্ড নিয়ে শাসকদলকে নিশানা করেছে বিরোধীরা। আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের প্রশ্ন, “এবার কি তৃণমূলের নেতা হলেই তারা ভ্যাকসিন নিজে হাতে দিতে পারবেন?” তিনি বলেন, “আমি যা জানি, ওঁর নার্সের ডিগ্রিও নেই ৷ দেবাঞ্জন দেব ভুয়ো আইএএস হয়ে শহরের প্রাণ কেন্দ্রে ভুয়ো ভ্যাক্সিনেশন ক্যাম্প করলেন। এবার তৃণমূলের নেতা নিজে ভ্যাকসিন দিচ্ছেন।“
যদিও তৃণমূলের আশ্বাস, এমন কিছু হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের কথায়, "প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র ভ্যাকসিন দিলেন। সেটা প্রশাসন দেখবে, হাতুড়ে ডাক্তাররাও এখন চিকিৎসা ব্যবস্থায় সামিল হয়েছেন। কেউ আসল টিকা দিলে তাতে অসুবিধের কিছু নেই দেওয়ার আগে ধ্যান ধারণা থাকা উচিত। নাহলে এটা বিপজ্জনক হতে পারে।"