মোহন দাস, গোঘাট (হুগলি): দলের নেত্রীকেই সপাটে চড় তৃণমূল নেতার। ধাক্কা মারতে মারতে বের করে দেওয়া হল পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষকে। শাসকদলের কোন্দল ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল হুগলির গোঘাটে। গ্রেফতার তৃণমূলেরই তিন নেতা-কর্মী।


ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হচ্ছে পঞ্চায়েত সমিতির মহিলা কর্মাধ্যক্ষকে। এর মাঝেই সপাটে চড়! সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে যে মহিলাকে আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে, তিনি তৃণমূলের নেত্রী।আর যিনি চড় মারছেন, তিনিও একজন তৃণমূল নেতা।


সোমবার হুগলির গোঘাট এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির দফতরের বাইরে ধরা পড়ে এই ছবি। গ্রেফতার তৃণমূলেরই তিনজন নেতা-কর্মী।যা আরও একবার সামনে নিয়ে এল শাসকদলের কোন্দল।


গত বিধানসভা নির্বাচনে গোঘাটে, বিজেপি প্রার্থীর কাছে হেরে যান প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক ও জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি মানস মজুমদার। তৃণমূল সূত্রে খবর, এরপর থেকেই মানসের সঙ্গে গোঘাট এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মনোরঞ্জন পালের বিবাদের সূত্রপাত।  এমনকি পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি নারায়ণ পাঁজাও মানস মজুমদারের অনুগামী হিসেবে পরিচিত।  দলের অন্দরে এই বিবাদ চরম আকার নেয় সোমবার। তৃণমূলের একাংশের অভিযোগ, মানসের অনুগামীরাই পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে চড়াও হন। হেনস্থা করা হয় সভাপতি ও দুই মহিলা কর্মাধ্যক্ষকে। 


তৃণমূল নেত্রী ও বন দফতরের কর্মাধ্যক্ষ শ্যামলী ঘোষকে ধাক্কা দিতে দিতে বের করে আনা হয়। তারপর তাঁকে সপাটে চড় মারেন তৃণমূল নেতা সুকুর আলি খান ওরফে ভাদু।শ্যামলী ছাড়াও আরেক তৃণমূল নেত্রী ও স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ ময়না বাগকেও হেনস্থা করা হয়েছে বলে অভিযোগ।


এই ঘটনায় জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতির অপসারণের দাবিতে মঙ্গলবার রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন দলীয় কর্মীদের একাংশ।হুগলি তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি মানস মজুমদার বলেছেন, আমি ঘটনা শোনার পরই দলকে জানিয়েছে। প্রশাসন ব্যবস্থা নিয়েছে। কে দোষী, দলই বিচার করবে।


তৃণমূলের এই কোন্দল দেখে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। তাদের বক্তব্য, রাজ্যে মহিলা মুখ্যমন্ত্রী। অথচ শাসক দলের মহিলা কর্মীই আক্রান্ত। আসলে এটা তৃণমূলের কাটমানি নিয়ে বিবাদের ফল।


জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি দিলীপ যাদব বলেছেন, এটা একেবারেই ঠিক হয়নি। কেন ঘটনা ঘটেছে, দলের নেতৃত্ব তদন্ত করবে।


পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষকে মারধরের অভিযোগে, মূল অভিযুক্ত সুকুর আলি খান-সহ তৃণমূলের তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।