সোমনাথ মিত্র, জাঙ্গিপাড়া: এবার জাঙ্গিপাড়া ব্লকের বেশ কয়েকটি জায়গায় দামোদরের বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। জাঙ্গিপাড়ার হরিহরপুর, বৃন্দাবন চক, মোড়হল, পসপুর এলাকার বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। অনবরত চুঁইয়ে চুইয়ে পড়ছে জল। ক্রমশ ধসছে মাটি।
এই পরিস্থিতিতে তৎপরতার সঙ্গে চলছে বাঁধ মেরামতির কাজ। তবে, এখনও আতঙ্কিত এলাকার মানুষ। বালির বস্তা ফেলে জল আটকানোর কাজ করছে প্রশাসন। কাজে হাত লাগিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারাও। ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে যান জাঙ্গিপাড়ার বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তী। বাঁধ মেরামতি ঠিকঠাক চলছে কিনা তা খতিয়ে দেখেন।
অন্যদিকে কালকের পর আজকেও বাড়ছে দামোদরের জল। হাওড়া-হুগলির সংযোগকারী জাঙ্গিপাড়ার বকপোঁতা সেতুর রাস্তার উপর দিয়ে জল বইছে হুহু করে। আতঙ্কিত রয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা।
জাঙ্গিপাড়া ব্লকেই প্রায় ৩ হাজার ২০০ হেক্টর আমন ধানের জমি ক্ষতিগ্ৰস্থ হয়েছে। তাছাড়া সবজি খেতেরও ক্ষতি হয়েছে অনেক। প্রায় ৩ হাজার মানুষ এখনো জলমগ্ন। নৌকায় করে যাতায়াত করছে বাসিন্দারা।
জাঙ্গিপাড়ার বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ইঁদুরে গর্ত, গাছের শিকড় থেকে কিছু কিছু জায়গায় লিকেজ দেখা দিয়েছে বাঁধে। ইতিমধ্যেই ২৭০০ কোটি টাকার বাঁধ মেরামতির কাজ চলছে। যে জায়গায় কাজটা কম হয়েছে, সেখানে লিকেজ দেখা দিয়েছে। ইঞ্জিনিয়াররা, সেচ দফতরের আধিকারিকরা জোরকদমে কাজ করছেন।
তাঁর আশ্বাস, সময়ে মেরামতি হয়ে যাবে। মাটির বস্তা দিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করা হচ্ছে। জলস্তরটা বেড়ে যাওয়ার জন্যেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানান তিনি। প্রবল বৃষ্টিতে উপচে পড়ছে দামোদর। প্লাবিত তারকেশ্বরের ব্লকের একাধিক এলাকা। বাঁধের ওপর তাবু খাটিয়ে অনেকেই ঠাঁই নিয়েছেন অস্থায়ী আস্তানায়।
অনেককেই আবার বাড়ি-ঘর ছেড়ে সংসার পাততে হয়েছে ছাদে। প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বাসিন্দারা। তারকেশ্বরের এক বাসিন্দা বলেন, সব জল ঢুকে গেছে, প্রশাসনের দেখা নেই, ভোটের সময় আসে বালির বস্তা দিয়ে পাড় শক্ত করা হয়েছে।
হুগলি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ (কৃষি ও সেচ) মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, মানুষের পাশে আছি, অভিযোগ ঠিক নয়। জেলার কৃষি আধিকারিক জানিয়েছেন, ২৮ হাজার হেক্টর কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।