ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, খানাকুল: বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হলে যেখানে গিয়ে আশ্রয় নেওয়ার কথা, জলের তলায় সেই আশ্রয়স্থলই। হুগলির খানাকুলের মারোখান পঞ্চায়েতের হানুয়ারে গোটা ফ্লাড-শেল্টারটাই জলবন্দি হয়ে পড়েছে। 


ভয়ঙ্কর বন্যা পরিস্থিতির মধ্যে মারোখানের ফ্লাড শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছে মাত্র পাঁচটি পরিবার। তার মধ্যে একটি পরিবারের দুই শিশু অসুস্থ। কিন্তু জলবন্দি হয়ে থাকায়, চিকিৎসার জন্য সন্তানকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। 


জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, বন্যা পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন ৭৮ হাজার ৩২৭ জন মানুষ। উদ্ধার করে ত্রাণশিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৯ হাজার ৬২৮ জনকে। তবে, সেখানকার পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।


হুগলি জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, খানাকুলে পুরোদস্তুর  ফ্লাড শেল্টার রয়েছে ৩টি পঞ্চায়েতে। তার বাইরে বিভিন্ন স্কুলে ফ্লাড শেল্টার করা হয়েছে। প্রাক্তন বিধায়ক তথা হুগলি জেলা পরিষদ সদস্য মুন্সি নজবুল করিম বলেন, আমাদের সরকারি ফ্লাড শেল্টার জলের তলায়। এই পরিস্থিতিতে স্কুলে রাখছি।


কিন্তু খানাকুলে স্কুলে গড়ে ওঠা সব ত্রাণশিবিরেও আশ্রয় নেওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই। একাধিক এলাকায় আস্ত স্কুলবাড়ির বেশিরভাগ অংশই ডুবে রয়েছে জলে। আর এবার তো কথাই নেই। জলবন্দি পরিবারকে উদ্ধার করতে এয়ারলিফ্ট করেছে বায়ুসেনা।


বৃহস্পতিবার বৃষ্টি কমলেও খানাকুলের বিস্তীর্ণ এলাকা এখনও জলের তলায়।  তার সঙ্গে খাবার ও পানীয় জলের হাহাকার তো রয়েইছে। এই দুঃস্বপ্নের মধ্যেই যেন ক্ষীণ আশার আলো দেখলেন খানাকুলের মানুষ। বৃহস্পতিবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে এলাকায় বিলি করা হয় শুকনো খাবার ও পানীয় জল।


সিভিল ডিফেন্সের জওয়ানরা পৌঁছে দেন ত্রাণ। একগলা জলে দাঁড়িয়ে ত্রাণ সংগ্রহ করতে দেখা গেল দুর্গত মানুষজনকে। তাঁদের দাবি, ৫ দিন পর মিলেছে ত্রাণ। 


যদিও ত্রাণ দিতে দেরি হওয়ার অভিযোগ উড়িয়ে খানাকুল ২নং ব্লকের বিডিও-র দাবি, পঞ্চায়েতের তরফে সমস্ত দুর্গত এলাকায় আগেই ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার আলাদা করে স্থানীয় প্রশাসনের তরফে এলাকায় ফের ত্রাণ দেওয়া হল।


রাজ্যের বন্যা মানচিত্রে হুগলির খানাকুল বরাবরই ভুক্তভোগী। ফি বছর দুর্বিষহ জলযন্ত্রণা পোহাতে হয় আরামবাগ মহকুমার অন্তর্গত এই গ্রামের বাসিন্দাদের।