সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রীরামপুর: নদী ভাঙনের জেরে হুগলির শ্রীরামপুরে গঙ্গারপাড়ে শ্মশানঘাটে ভেঙে পড়ল শিবমন্দির। ভেঙে পড়ার আশঙ্কা বৈদ্যুতিক চুল্লির।
পশ্চিমে সরেছে নিম্নচাপ। ফলে অনেকটাই কমেছে বৃষ্টি। কিন্তু স্বস্তির বদলে আশঙ্কা বেড়েছে সাধারণ মানুষের। শ্রীরামপুরের চাতরায় গঙ্গার পাড়ে কালীবাবুর শ্মশানঘাট। সেখানে বেশ কিছুদিন ধরেই পাড় ভাঙছে গঙ্গার। সেই ভাঙনের জেরে শনিবার ভেঙে পড়ে শ্মশানের মধ্যে থাকা শিবমন্দির।
ফাটল ধরেছে ঘাটেও। স্থানীয়দের অভিযোগ, যে কোনও মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে বৈদ্যুতিক চুল্লিও। শ্রীরামপুর চাতরা শ্মশানঘাটের এক কর্মী বলেন, বৃষ্টিতে দেওয়ালে ফাটল ধরেছে। গঙ্গার জল ধাক্কা মারছে পাড়ে। চুল্লির বড় চিমনিটা দুলছে। এখানেই পরিবার নিয়ে থাকি। ফলে, খুব ভয় লাগছে।
এলাকা পরিদর্শন করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে পুরসভা। পুর প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য সন্তোষ সিংহ বলেন, বৃষ্টিতে ধসে গিয়েছে মন্দির, ঘাট। বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। জেলা প্রশাসন, পোর্ট ট্রাস্ট ও সেচ দফতরকে জানানো হয়েছে। শ্মশানের চুল্লি শ্রীরামপুরের একমাত্র বৈদ্যুতিক চুল্লি, বন্ধ হলে সমস্যা হবে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের জেরে বৃষ্টিতে বানভাসি অবস্থা রাজ্যের বিভিন্ন জেলায়। হুগলিতেও একই অবস্থা। গ্রামীণ হুগলিতে নদী উপচে ভাসিয়ে দিয়েছে ঘর বাড়ি চাষের জমি। অন্যদিকে শহর হুগলিতে জলবন্দি হয়েছে শহরবাসী। অতি বৃষ্টিতে গঙ্গার জলস্তর বেড়েছে।
বৃষ্টি থামলেও এখনও বিপর্যস্ত হুগলির গোঘাটের নকুন্দা পঞ্চায়েত এলাকা। বাড়ি থেকে চাষের জমি সর্বত্র জল থইথই। জলের তলায় ১০-১২টি গ্রাম। পাশাপাশি দ্বারকেশ্বর নদের জলস্তর বাড়ায় জলমগ্ন আরামবাগ পুরসভার ১২ ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ড।
বাঁধপাড়া এলাকার বহু বাড়িতে জল ঢুকে যাওয়ায়, বাড়ি ছেড়ে ত্রিপল টাঙিয়ে অস্থায়ী আস্তানায় ঠাঁই নিয়েছেন বাসিন্দারা। আরামবাগ-কলকাতা রাজ্য সড়কের মায়াপুর এলাকায় রাস্তার ওপর দিয়েও বইছে জল।
ব্যান্ডেলে ডুবে গিয়েছে আন্ডারপাস। গোঘাটে প্লাবিত একাধিক এলাকা। চুঁচুড়া, শ্রীরামপুর, ডানকুনি পুরসভার বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন। বহু জায়গায় বাড়িতে ঢুকেছে বৃষ্টির জল। তার জেরে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে অসংখ্য পরিবারকে।